কী ভাবে শৃঙ্খলায় বাঁধা যায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে। ছাত্রভোটের পদ্ধতিই বা কেমন হবে। নতুন শিক্ষা আইন অনুযায়ী এই সব কিছুর রাস্তা বাতলে বিধি তৈরির জন্য দু’টি কমিটি গঠন করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, ওই দুই কমিটি সংশ্লিষ্ট সব দিক খতিয়ে দেখে কী কী নিয়মবিধি তৈরি করা যায়, সেই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দেবে। নিয়মবিধির আদল কেমন হবে, সুপারিশের আকারে তার খসড়াও পেশ করবে তারা। তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
একটি কমিটি নিয়মকানুন তৈরির পরামর্শ দেবে এবং খসড়া বিধি তৈরি করবে কলেজের জন্য। অন্য কমিটি একই কাজ করবে, তবে তাদের ক্ষেত্র হবে বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজের জন্য তৈরি সতেরো সদস্যের কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন ডিপিআই জয়শ্রী রায়চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তৈরি কমিটিতে রয়েছেন ন’জন সদস্য। কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভশঙ্কর সরকারকে।
উদ্যোগ পর্বেই প্রবল বিতর্কের পরে পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ (প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রণ) বিল ফেব্রুয়ারিতে পাশ হয়েছে বিধানসভায়। ওই শিক্ষা বিল আইনে পরিণত হয়ে কাগজে-কলমে বলবৎ হয়েছে ১ এপ্রিল থেকে। কী ভাবে এই আইন প্রয়োগ করা হবে, তারই পথ বার করবে জোড়া কমিটি। তাদের দেখানো রাস্তায় তৈরি হবে নির্দিষ্ট কয়েকটি বিধি। কার্যক্ষেত্রে আইন রূপায়ণে সেগুলোই হবে হাতিয়ার।
আরও পড়ুন...
শিল্প বান্ধবের দৌড়েও পিছিয়ে পড়ল বাংলা
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বৃহস্পতিবার জানান, আট ঘাট বেঁধে বিধি ঠিক করতে হবে বাস্তবে আইনের বিভিন্ন ধারার কার্যকর প্রয়োগের জন্যই। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নতুন আইন অনুযায়ী এই প্রথম সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বদলির ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে। এ বার এই বদলি অঞ্চল-ভিত্তিক হবে কি না, শিক্ষিকাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে কি না, শারীরিক প্রতিবন্ধীরা কতটা গুরুত্ব পাবেন— সব দিক খুঁটিয়ে দেখে এগুলো ঠিক করতে হবে। সেই খতিয়ে দেখাটাই কমিটির কাজ।’’ শুধু প্রয়োগ-পথের সুপারিশ করাই নয়, জোড়া কমিটি নিয়মবিধির সম্ভাব্য রূপরেখাও ছকে দিতে পারে।
নতুন দুই কমিটির বিবেচনার তালিকায় থাকছে আরও বেশ কিছু বিষয়। যেমন নতুন আইন অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের দক্ষতার বার্ষিক মূল্যায়নে কী কী তথ্য থাকবে, তা ঠিক করে দেবে ওই জোড়া কমিটি। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মানুবর্তিতা ফেরাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, হাজিরার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হবে ঠিক কোন পদ্ধতিতে, ছাত্র সংসদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে— এই সমস্ত কিছুরই পথ বাতলে দেবে নবগঠিত দুই কমিটি। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাঁদের ন্যূনতম যোগ্যতা কী হবে, সেই ব্যাপারেও সুপারিশ করতে বলা হয়েছে জোড়া কমিটিকে।
প্রস্তাব, বিধির খসড়া রূপরেখা-সহ জোড়া রিপোর্ট তিন মাসের মধ্যে জমা পড়ার পরে রাজ্য সরকার তা খতিয়ে দেখে বিধি চূড়ান্ত করবে বলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর।