Rohingya

প্রশিক্ষিত জঙ্গি রোহিঙ্গা গারদে

পুলিশ জানায়, জেরায় সুকুর বলেছেন, জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিলেও তিনি আরএসএ-র হয়ে কোনও কাজ করেননি।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাংলাদেশ থেকে ঘুটিয়ারি শরিফে এসে অস্থায়ী ঘাঁটি গেড়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে জম্মু যাওয়ার পথে ২৫ ডিসেম্বর রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর হাতে গ্রেফতার হন দুই রোহিঙ্গা যুবক। পুলিশ জানায়, ধৃতদের এক জন রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরএসএ)-র জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এই প্রথম আরএসএ-র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনও রোহিঙ্গা যুবক পশ্চিমবঙ্গে এসে ধরা পড়লেন।

Advertisement

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির খবর, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ ও বাংলাদেশের কক্সবাজারে আরএসএ-কে পরিচালনা করে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। এ-পার বাংলার মাটিতে আরএসএ-র প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা যুবক ধরা পড়ায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি চিন্তিত।

এসটিএফ সূত্রের খবর, বড়দিনে হাওড়া স্টেশনের পথে মহম্মদ সুকুর (২৮) এবং মহম্মদ নাসির ওরফে নাসিরুল্লা (১৮) নামে ওই দুই রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুকুরের আদিবাড়ি রাখাইনের মাংদাও জেলায়, নাসিরের বাড়ি ছিল কুলভি মান্ডু এলাকায়। জেরার মুখে তাঁরা জানান, মায়ানমার সেনার অত্যাচারে ২০১৭ সালে তাঁরা বাংলাদেশের কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরে এসে পৌঁছন। সুকুর জেরায় জানান, কুতুপালং থেকে জাদিমুরা শিবিরে পৌঁছন তিনি। সেখানে মহম্মদ সিরাজ নামে এক রোহিঙ্গা নেতা তাঁকে একটি দোতলা বাড়িতে নিয়ে যান। সেই বাড়িতে ছিলেন আরও ১৫-২০ জন রোহিঙ্গা যুবক। সেখানেই তাঁকে প্রশিক্ষণ দেয় আরএসএ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, জেরায় সুকুর বলেছেন, জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিলেও তিনি আরএসএ-র হয়ে কোনও কাজ করেননি। পরে শিবির থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। জঙ্গি কাজকর্মের জন্য নয়, রোজগারের আশাতেই দালালের মাধ্যমে তিনি ডিসেম্বরের প্রথমে সাতক্ষীরা থেকে নদীপথে ভারতে ঢোকেন। নাসির পুলিশকে জানান, তিনি দিল মহম্মদ ওরফে রানা নামে এক দালালের মাধ্যমে রাজ্যে ঢোকেন। দু’জনেই ঘুটিয়ারি শরিফে বাড়ি ভাড়া নেন। মজুরের কাজ করছিলেন। আরও রোজগারের আশায় তাঁরা জম্মু যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দিল মহম্মদ তাঁদের জম্মুর এক দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে ভারতে এসে ঘুটিয়ারি শরিফে থাকা, জম্মুতে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের নামে নকল উদ্বাস্তু পরিচয়পত্র বানিয়ে দিতে দালালেরা তাঁদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নেয় বলে জানান ধৃতেরা। জম্মু থেকে সেই দালাল ঘুটিয়ারি শরিফে এসে তাঁদের নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। বিষয়টি এসটিএফের নজরে আসে। হাওড়ার পথে ধরা পড়ে যান তাঁরা।

এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় সন্দেশখালি থেকে নদীপথে শত শত রোহিঙ্গা ভারতে ঢুকে ঘাঁটি গাড়ছিল। কিন্তু বিতর্কের জেরে সেই অস্থায়ী শিবির রাতারাতি উধাও হয়ে যায়। তার পরেও রোহিঙ্গারা যে নদী পেরিয়ে ক্রমাগত এসেই চলেছেন, এই ঘটনায় সেটা ফের প্রমাণিত হল বলে জানান এসটিএফ-কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন