ঠিকানা বদলে বাঘেরা এ বার চলল শিলিগুড়ি

ওড়িশা থেকে দশ মাস আগে ঠাঁই বদলে আলিপুর চিড়িয়াখানায় এসেছিল ওরা। এ বার ফের আস্তানা বদলে যাচ্ছে স্নেহাশিস ও শীলা নামে দুই রয়্যাল বেঙ্গলের।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

ওড়িশা থেকে দশ মাস আগে ঠাঁই বদলে আলিপুর চিড়িয়াখানায় এসেছিল ওরা। এ বার ফের আস্তানা বদলে যাচ্ছে স্নেহাশিস ও শীলা নামে দুই রয়্যাল বেঙ্গলের। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ জু অথরিটির সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব জানান, ওই দু’টি বাঘকে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। এ দিনই খাঁচা-ট্রাকে চেপে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে দু’জন। সঙ্গে গিয়েছেন পশু চিকিৎসক, কিপার, চিড়িয়াখানার কর্মীরাও।

Advertisement

বন দফতর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির সাত মাইলের কাছে ২০ হেক্টর জমিতে সাফারি পার্ক খোলা হয়েছে। অভয়ারণ্যের ধাঁচে সেখানে গাড়িতে চেপে বাঘ-দর্শন করতে পারবেন পর্যটকেরা। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ওই সাফারি পার্কের উদ্বোধন হওয়ার কথা। তার আগেই বাঘেদের ছেড়ে সাফারি পার্কের কাজ পুরোপুরি সেরে ফেলা হচ্ছে।

আলিপুর চিড়িয়াখানার সাদা বাঘিনী রূপার জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষমেশ ওড়িশার নন্দনকানন থেকে আনা হয় পূর্ণবয়স্ক সাদা বাঘ ঋষিকে। শ্বশুরবাড়িতে এখন জমিয়েই বসেছে সে। ফেব্রুয়ারি মাসে ঋষির ‘বরযাত্রী’ হিসেবেই কলকাতায় এসেছিল হলুদ-কালো ডোরাকাটা স্নেহাশিস, শীলা এবং পায়েল।

Advertisement

চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, পায়েলের বয়স এখন আট বছর। স্নেহাশিস ও শীলা দু’জনেরই আড়াই। তাই শিলিগুড়ির সাফারি পার্কের জুটি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সমবয়সী দু’জনকেই। ভবিষ্যতে ওই সাফারি পার্কে বাঘ-দম্পতির বংশবৃদ্ধির পরিকল্পনাও রয়েছে রাজ্য সরকারের।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আলিপুরে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১। এ দিন কমে হল ৯। যদিও বন দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘নন্দন কানন থেকে বাঘ আনার সময়েই শিলিগুড়ির কথা মাথায় রাখা হয়েছিল। ফলে চিড়িয়াখানায় বাঘ কমে গেল, এ কথা পুরোপুরি ঠিক নয়।’’

অনেকেই বলছেন, স্নেহাশিস, শীলার জন্ম চিড়িয়াখানায়। বড় হয়েছে ঘেরাটোপেই। খোলা জায়গায় থাকলে খাবার পেতে বা জীবনধারণে সমস্যা হবে না? চিড়িয়াখানার কর্তারা কিন্তু তেমন বলছেন না। তাঁদের ব্যাখ্যা, ২০ হেক্টর বনাঞ্চলের মধ্যে থাকলেও আদতে সাফারি পার্ক ঘেরাটোপই। সেখানেও ওদের জন্য ‘কিপার’ থাকবেন। খাবারও দেওয়া হবে নির্দিষ্ট হারেই। সাফারি পার্ক আদতে এমন এক ঘেরাটোপের এলাকা, যেখানে পর্যাপ্ত জায়গা, প্রাকৃতিক পরিবেশ, সবই মিলবে।

গরাদ-ঘেরা দিনযাপন পিছনে ফেলে মুক্ত জীবনে পা বাড়াচ্ছে বাঘ-দম্পতি। বিদায়বেলায় আলিপুর চিড়িয়াখানায় বিষণ্ণতার ছায়া। অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বললেন, ‘‘দশ মাসেই বড্ড মায়া পড়ে গিয়েছিল ওদের উপরে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন