মুড়িগঙ্গায় আটকে গেল সাগরমুখী দুই জলযান

শুরুতেই হোঁচট। মকরসংক্রান্তির স্নান রবিবার। তার আগেই, শুক্রবার গঙ্গাসাগর যাওয়ার পথে মাঝনদীতে আটকে গেল পুণ্যার্থীদের দু’টি ভেসেল।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

সাগরদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪২
Share:

সঙ্গ: গঙ্গাসাগরমুখী সাধুদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী। বাবুঘাটে। —নিজস্ব চিত্র।

শুরুতেই হোঁচট। মকরসংক্রান্তির স্নান রবিবার। তার আগেই, শুক্রবার গঙ্গাসাগর যাওয়ার পথে মাঝনদীতে আটকে গেল পুণ্যার্থীদের দু’টি ভেসেল।

Advertisement

জলযানের জন্য নদীজলের ন্যূনতম গভীরতা দু’মিটার হওয়া দরকার। অথচ সেটা মাত্র দেড় মিটার হওয়ার পরেই আট নম্বর লট থেকে ছেড়ে দিয়েছিল ভেসেল। আর তাতেই বিপত্তি। মুড়িগঙ্গা নদীর মাঝখানে আটকে গেল যাত্রী-ভর্তি ভেসেল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার আট নম্বর লট থেকেই ছেড়েছিল ওই দুই জলযান। বেলা ৩টে থেকে বিকেল পৌনে ৪টে পর্যন্ত নদীর মধ্যে ঠায় আটকে ছিল দু’টি ভেসেল। কয়েক জন কর্মী তখন নদীজলের গভীরতা মাপতে ব্যস্ত।

জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও এ দিন জানান, পলি পড়ে নাব্যতা কমে যাওয়ার ফলেই এই সমস্যা হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, প্রায় প্রতিদিনই পলি তোলা হলেও ফের পলি পড়ছে। সেই জন্য এডিসিপি নামে একটি যন্ত্র দিয়ে প্রতিনিয়ত জল মাপার কাজ চলছে। জলের গভীরতা অন্তত দু’মিটার হচ্ছে কি না, সেটা দেখেই ভেসেল চালানো হচ্ছে। ওই যন্ত্র জানিয়ে দেয়, কোথায় জলের গভীরতা কত। সেই অনুসারে রুট দিয়ে ভেসেল চালানো হয়। কিন্তু এ দিন, সেখানেই ছন্দপতন ঘটে গিয়েছে বলে জানান জলের গভীরতা মাপতে ব্যস্ত কয়েক জন কর্মী।

Advertisement

এক কর্মীর অভিযোগ, সবুজ সঙ্কেত না-দেওয়া সত্ত্বেও ভেসেল চলে আসায় বিপত্তি ঘটেছে। গভীরতা মাপার যন্ত্র এডিসিপি থাকতেও কেন এমন হল, খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। তিনিও খোঁজখবর নেবেন বলে জানান জেলাশাসক।

জেলাশাসকের দাবি, সাগরে এ বছর কয়েক গুণ নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বাবুঘাট, পৈলান, লট-৮, কচুবেড়িয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় মোট ৬০টি স্ক্রিনে নজর রাখছেন কর্মীরা। গঙ্গাসাগর মেলার কাছে জেলাশাসকের মেলা অফিসের পাশে কন্ট্রোল রুম চালু হয়েছে। ৫০০টি সিসি ক্যামেরা এবং সাতটি ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চলছে। পুলিশ আছে তিন হাজারেরও বেশি।

এ বার রাতের ছবি তোলার জন্য বিশেষ ড্রোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তীর্থযাত্রীর চাপ সামলাতে আছে দু’টি অতিরিক্ত বার্জ। প্রতিটি বার্জে প্রায় সাড়ে তিন হাজার যাত্রী উঠতে পারেন। এর ফলে বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলানো যাবে বলে জানান জেলাশাসক। এ বার ‘বাফার জোন’ (পুণ্যার্থীরা যেখানে জড়ো হন) থেকেই তীর্থযাত্রীদের লঞ্চের টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক জানান, আগামী রবিবার থেকে আট নম্বর লটের বাফার জোনে তীর্থযাত্রীদের টিকিট বিক্রি করবে কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতি। গত বছর বাফার জোন ছিল পাঁচটি। এ বছর সেটা ১৩ হয়েছে বলে জানান জেলাশাসক। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে প্রায় তিন লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন