অমিতের সভা ঘিরে দোলাচলই

সেই উৎসাহে জল ঢেলে রাতেই মিলল অমিত শাহের অসুস্থতার খবর। সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে তিনি দিল্লির এইমস-এ ভর্তি। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১২
Share:

মুহূর্ত: সিউড়িতে প্রস্তুতি বৈঠক। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেই ডিসেম্বর থেকে প্রশ্ন ঘুরছিল জেলা বিজেপি-তে। রথযাত্রা হবে কি হবে না। তিনি আসবেন কি আসবেন না। সুপ্রিম কোর্টের রায় রথযাত্রার আশায় জল ঢেলেছে। কিন্তু, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ২১ জানুয়ারি সিউড়িতে সভা করবেন শুনে বুধবার চাঙ্গা হয়েছিলেন জেলা বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। সেই উৎসাহে জল ঢেলে রাতেই মিলল অমিত শাহের অসুস্থতার খবর। সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে তিনি দিল্লির এইমস-এ ভর্তি। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

Advertisement

এ কথা জেনে ফের আশা নিরাশার দ্বন্দ্বে কর্মীরা। সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হলে এত তাড়াতাড়ি কী করে সুস্থ হবেন সভাপতি, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হয়েছে দলের কর্মীমহলে। বৃহস্পতিবার অবশ্য দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা এ রাজ্যের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সিউড়িতে এসে দাবি করলেন অমিত শাহ আসছেন। নির্ধারিত সূচি মেনেই ২০ থেকে ২২—তিন দিন এ রাজ্যে সভাগুলি হবে। কৈলাস বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি ভাল আছেন। শুক্রবারের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাবেন।’’

আশ্বাস বিশ্বাস করবেন নাকি সৌয়াইন ফ্লু—দুইয়ের মাঝে পড়ে কার্যত দোলাচলে জেলা বিজেপি-র সদস্যেরা। ২১ তারিখের সভায় লোক আসবে যাঁর নামে তিনিই আসবেন কিনা, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

Advertisement

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বিজেপির ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ নিয়ে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরেরদিনই বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করে বিজেপি। জানানো হয় ব্রিগেডে তৃণমূলের মেগা র‌্যালি শেষ হওয়ার পরেই রাজ্যের ৪২টি বিধানসভা কেন্দ্রে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও সভা’ নাম দিয়ে আলাদা আলাদা জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। বুধবার দিলীপ ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা জানান। ৮ ফেব্রুয়ারি বিগ্রেডে সভা করতে আসতে পারেন মোদী এমন ইঙ্গিতও দেন রাজ্য সভাপতি। বৃহস্পতিবার সিউড়িতে দাঁড়িয়ে প্রায় একই ইঙ্গিত দিলেন কৈলাশও। তিনি বলেন, ‘‘শুধু অমিত শাহই নন, নরেন্দ্র মোদীও বাংলায় এসে সভা করবেন এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মোদী এলে যে ভিড় হবে তা বলাই বাহুল্য। এই তালিকায় ছিল সিউড়িও। কারণ রথযাত্রাতেও পাখির চোখ ছিল বীরভূম। তারাপীঠ থেকে রথযাত্রা বের হওয়ার কথা ছিল। রথযাত্রা বাতিল হওয়ার পর সভার মুখ যিনি, তাঁর আসাতেও সংশয় তৈরি হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন নেতা, কর্মীরা। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই দলের কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্যে এবার জেলার কর্মীরা বুঝতে পারছেন না এটা নেহাতই মনোবল বাড়ানোর দাওয়াই নাকি মুখরক্ষা হবে শেষ পর্যন্ত!

অমিত শাহ-র সভার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতে বৃহস্পতিবার সিউড়িতে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। এ দিন শহরের রামকৃষ্ণ সভাগৃহে আয়োজিত সেই বৈঠকে এসে কৈলাশ বলেন, ‘‘নির্ধারিত সূচি অনুয়ায়ী ২০ তারিখ মালদহ, ২১ তারিখ সিউড়ি ও ঝাড়গ্রাম এবং ২২তারিখ কৃষ্ণনগরের সভায় উপস্থিত থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি।’’ এ দিনের বৈঠকেও দলের নেতা কর্মীদের জোরকদমে প্রস্তুতি নেওয়ার বার্তা দেন কৈলাশ। বীরভূমের বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘অমিত শাহ আসছেন শুনে আমরা প্রস্তুতি শুরু করছি। মাঠের অনুমতি পেতে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি।’’

এ দিন সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রীর বিগ্রেডের সমাবেশ ও জোট বাঁধার উদ্দেশ্যকে কটাক্ষ করেন কৈলাশ বলেন, ‘‘এটা গাঁট বন্ধন নয়, ঠগ বন্ধন।

নদীতে বন্যা এলে যে ভাবে একে অপরের হাত ধরে, সেভাবেই বিজেপি ও মোদীজি নামক বন্যা থেকে বাঁচার চেষ্টা।’’ কৈলাশের আরও কটাক্ষ, ‘‘সবাই এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। মায়াবতী দেখেছন। দিদিও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কারও স্বপ্ন দেখা তো রুখতে পারব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement