মৌলিক অধিকারের পাঠ স্কুলপড়ুুুয়াদের

রাজ্যে দু’বছর ধরে ইউনিসেফের নির্ধারিত রূপরেখা মেনে প্রশিক্ষণ দেবে ১২টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা-সহ সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার এবং কর্তব্য সম্পর্কে স্কুলপড়ুয়াদের সচেতন করতে নতুন কর্মসূচি নিয়েছে ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস ইমার্জেন্সি ফান্ড বা ইউনিসেফ। পশ্চিমবঙ্গ থেকেই শুরু হচ্ছে এই নতুন কর্মসূচি।

Advertisement

রাজ্যে দু’বছর ধরে ইউনিসেফের নির্ধারিত রূপরেখা মেনে প্রশিক্ষণ দেবে ১২টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রাথমিক পর্বে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের ১০ থেকে ১৯ বছরের অন্তত ৩০ হাজার পড়ুয়াকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরে এই কর্মসূচি গোটা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সামাজিক কর্তব্য পালন, সৌভ্রাতৃত্ব এবং সামাজিক একতা রক্ষা করা, পরিবেশ চেতনা— সংবিধানে থাকা এ-সব বিষয়ে পড়ুয়াদের খেলার ছলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। লক্ষ্য একটাই, প্রশিক্ষিত ছাত্রছাত্রীরা তাদের পরিজন, পরিচিত, বন্ধু মহলে এই সচেতনতা ছড়িয়ে দেবে। এ ভাবেই সমাজে উপযুক্ত চেতনার ধারাবাহিকতা তৈরি করা যাবে বলে মনে করছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীন প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সংবিধান বর্ণিত এই সব অধিকারের ব্যাখ্যা যে-ভাবে থাকলে তা খুদে ছোট ছোট পড়ুয়া এবং বয়ঃসন্ধির ছাত্রছাত্রীদের কাছে সহজবোধ্য হয়, বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে সেগুলো তেমন ভাবে থাকে না। অথচ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই সচেতনতা খুব জরুরি। এক কর্তার কথায়, “শুধু নিজে কী করব, সেটুকুই নয়। সমাজের প্রতি আমার কর্তব্য কী, সেটা জানাও খুব জরুরি। সেই জন্যই এই সচেতনতা কর্মসূচি।”

ইদানীং ভিন্ন স্বর চাপা দেওয়ার অশুভ প্রয়াস চলছে। তৈরি হয়েছে অসহিষ্ণুতা, অবিশ্বাস, ভেদাভেদের বাতাবরণ। এর দায় কার, তা নিয়ে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানিতে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। এই অবস্থায় ভাবী নাগরিকদের সচেতন করা বেশি জরুরি বলে মনে করছে ইউনিসেফ।

রাজ্য সরকার এই কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভাল। এতে আমার সমর্থন আছে। শুরু থেকেই সংবিধানের পাঠ থাকলে তা সামাজিক সচেতনতার পক্ষে মঙ্গল। সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা আমাদের কাছে এলে পড়ুয়া, স্কুলের সূচির মতো সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।”

অনেক প্রবীণ প্রশাসনিক কর্তার ব্যাখ্যা, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে নতুন ভোটারের সংখ্যাধিক্য ছিল চোখে পড়ার মতো। তাঁদের মতামত নিজেদের পক্ষে টানতে তৎপর ছিল সব দলই। ইউনিসেফের এই প্রকল্পও ‘জেনারেশন নেক্সট’-এর বাড়তি গুরুত্ব তুলে ধরছে। এই প্রকল্পের ‘নোডাল এজেন্সি’র তরফে সমাজকর্মী বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের দাবি, শীঘ্রই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন