নবান্নে রাজনাথ, মমতা। ছবি: পিটিআই।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য নথিভুক্ত করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
সোমবার নবান্নে ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের বৈঠকে রাজনাথ সিংহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার এবং ওড়িশার অর্থমন্ত্রী শশীভূষণ বেহেরা।
ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের ২৩তম বৈঠকের শেষে রাজনাথ এ দিন বলেন, “রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে তাঁরা যেন বেআইনি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে। তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেয়। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কূটনৈতিক পথে মায়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করা হবে।”
আরও পড়ুন: পুজোয় দিল্লি-কলকাতা ডবল ডেকার বিমান চালাবে এয়ার ইন্ডিয়া
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কের ফ্ল্যাট-সহ নীরব মোদীর ৬৭৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী ভারতে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অন্যতম করিডর হিসাবে চিহ্নিত করেছেন গোয়েন্দারা। যদিও এই মূহূর্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের বড় অংশই জম্মু-কাশ্মীরে আস্তানা গেড়েছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। কলকাতার উপকণ্ঠে বারুইপুরে রীতিমতো শিবির করে রয়েছেন কয়েকশো রোহিঙ্গা।
শুরুতে জেলা প্রশাসনগুলি রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি সে-ভাবে বুঝতে পারেনি। তবে গত ডিসেম্বরের পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক এলাকায় ১৬৮ জন রোহিঙ্গার উপস্থিতি টের পায় জেলা পুলিশ। তবে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে ‘ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশন অব রিফিউজি’র পরিচয়পত্র থাকা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৬১। প্রশাসনের অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিভিন্ন হোম ও সংশোধনাগারে অন্তত ৪০ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন। নবান্নের শীর্ষ মহলকেও এই তথ্য সংবলিত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুপ্রবেশ সমস্যা মেটাতেই উদ্যোগী কেন্দ্র।
সূত্রের খবর এ দিনের বৈঠকে এই চার রাজ্যের নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য খতিয়ে দেখা হয়। রাজনাথ বলেন, “প্রায় তিরিশটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে ২৬টি ইস্যুর সমাধান করতে পেরেছি।” এ রাজ্যেজামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সংগঠন নিয়ে এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। পাশাপাশি আলোচনা হয়মাওবাদী সংগঠন নিয়েও।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের তরফে রাজনাথকে বলা হয়, ফের ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় মাওবাদীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই মূহূর্তে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নিলে সমস্যা বাড়বে। রাজনাথকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,“রাজ্যের কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের মতো কিছু বাধ্যবাধকতা থাকায় বাহিনী তুলতে হয়। আবার প্রয়োজন অনুযায়ী ফেরতও দেওয়া হয়।”