‘বাংলা’ এবং ‘মাদ্রাসা’ নিয়ে তৃণমূলের পাশে কংগ্রেস-সিপিএম

পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টে সব ভাষায় ‘বাংলা’ করার সর্বসম্মত প্রস্তাব ২০১৬ সালে পাশ হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায়। তার পর থেকে ছাড়পত্রের জন্য সেই প্রস্তাব পড়ে আছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৯ ০৩:১৫
Share:

নামবদল ইস্যুতে বিরোধী দলদের পাশে পেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

রাজ্যের নাম আপাতত পশ্চিমবঙ্গ থেকে ‘বাংলা’ হচ্ছে না। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই ইঙ্গিত দেওয়ার পরেই রাজ্যের নামবদল নিয়ে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ গড়িমসির অভিযোগ তুলে বাংলায় একযোগে সরব হল তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রের ওই মনোভাবের প্রতিবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মাদ্রাসায় জঙ্গি কাজকর্ম সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতেও একই ভাবে বিজেপি-বিরোধী অবস্থান নিল তিন দল।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টে সব ভাষায় ‘বাংলা’ করার সর্বসম্মত প্রস্তাব ২০১৬ সালে পাশ হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায়। তার পর থেকে ছাড়পত্রের জন্য সেই প্রস্তাব পড়ে আছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। রাজনাথ সিংহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁকে একাধিক বার এই বিষয়ে অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম বদলের বিষয়ে বুধবার রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান, পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টানো হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না, সেই ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘‘কোনও রাজ্যের নাম পরিবর্তন করতে হলে সব বিষয় দেখার পরে সংবিধান সংশোধন করার প্রয়োজন হয়।’’ তৃণমূল-সহ বিরোধীদের মতে, সংবিধান সংশোধনের দায়িত্ব কেন্দ্রেরই। এমন জবাব দিয়ে কেন্দ্র বুঝিয়ে দিয়েছে, রাজ্যের নাম বদল নিয়ে তারা এখন ভাবছে না।

কেন্দ্রের বক্তব্য জানার পরে রাজ্য বিধানসভায় এ দিন আব্দুল মান্নান প্রস্তাব দেন, কেন্দ্র যে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে’ বাংলার বিষয়টি ফেলে রেখেছে, তার জন্য তাদের কাছে ফের চিঠি পাঠানো হোক। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংবিধান সংশোধন করতে হবে, এ আর কে না জানে! এমন কথা বলার মানে সহজেই বোঝা যায়।’’ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রস্তাব দেন, রাজ্য বিধানসভার মনোভাবের কথা ফের কেন্দ্রকে জানানো হোক। পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেন, বাংলার মানুষের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে সংসদের চলতি অধিবেশনেই সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হোক।

Advertisement

রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছিল, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে বাংলার নামের মিল রয়েছে। তাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে বিদেশ মন্ত্রকের মতামত নেওয়া প্রয়োজন। তার পরে আড়াই বছর বিষয়টি ফেলা রাখা হয়েছে। অথচ ভারতের একটি রাজ্য যেমন পঞ্জাব, তেমনই পাকিস্তানেও পঞ্জাব প্রদেশ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয় না!’’

একই ভাবে মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ চলছে বলে কেন্দ্রের আর এক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরুদ্ধেও এ দিন সরব হয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থবাবু ও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এবং বিরোধী শিবিরের মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁদের সকলেরই বক্তব্য, কোনও নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ ছাড়া ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এক ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন