শিলিগুড়িতে গোর্খাল্যান্ড-বিরোধী মিছিল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
মোর্চা মুখে বারবার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বললেও পাহাড়ে রোজই কিছু না কিছু হিংসার ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে এক দিকে যেমন সমতলে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে, অন্য দিকে হিংসার বিরোধিতা করে চাপ বাড়াচ্ছে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের যুক্ত অন্য দলগুলি। চাপের মুখে কোণঠাসা মোর্চা এ দিন অভিযোগ করল, সব হিংসা ও পাহাড়-সমতল বিভেদ তৈরির পিছনে রয়েছে তৃণমূল। এই সব ঘটনার সিবিআই তদন্ত ও কেন্দ্রের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করেছে মোর্চা।
হিংসা ছেড়ে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনের ডাক দিয়ে মোর্চার উপরে ক্রমেই চাপ বাড়াচ্ছে জিএনএলএফ। রবিবার দলের তরফে জানানো হয়, পাহাড়ে হিংসার ঘটনা তাঁরা সমর্থন করছেন না। এই সব ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিও তুলেছেন তাঁরা। আজ, সোমবার থেকে পাহাড় জুড়ে মিছিল-মিটিংয়ের ডাক দিয়েছে জিএনএলএফ। তাতে দলীর সভাপতি মন ঘিসিঙ্গ ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এই কথা জানান দলের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা। একই সঙ্গে দলের কালিম্পং কমিটিকেও ঢেলে সাজছেন তাঁরা। ১৯৮৬ সালের ২৭ জুলাই পুলিশের গুলিতে আন্দোলনকারীদের কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ বারে ওই দিনটি পাহাড় জুড়ে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করবে জিএনএলএফ। দলের তরফে বলা হচ্ছে, সেই সময়ে সুবাস ঘিসিঙ্গের আন্দোলনের স্মৃতি উস্কে দিতেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু জিএনএলএফের এই সিদ্ধান্তে মোর্চার চাপ বাড়ছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে কথাই চাইছে রাজ্য
এ দিকে পাহাড়ে হিংসাও অব্যাহত। শনিবার রাতে কার্শিয়াঙে দমকলের তিনটি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে, রেশম দফতরে আগুন ধরানোর চেষ্টা হয়। হিলকার্ট রোডে একটি স্কুলের সামনে শিলিগুড়িগামী একটি গাড়ি জ্বালানো হয়। কার্শিয়াং জিরো পয়েন্টে একটি ছোট গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
এই হিংসার দায় নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে এ দিন বিবৃতি দিয়েছেন মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গ। তাঁর দাবি, পুলিশ, সিআরপি-র সামনে সরকারি সম্পত্তির ভাঙচুর চালাচ্ছে শাসকদল। সিকিমের যে সব গাড়ির উপরে সমতলে হামলা হয়েছে, তার দায়ও তৃণমূলের উপরে চাপিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। তাই সকলেরই মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তার অর্থ এই নয় যে, শিলিগুড়িতে তাদের উপরে হামলা হবে, তাদের গাড়ি ভাঙচুর হবে। ১৭ জুন সিংমারির হাঙ্গামা থেকে এখন পর্যন্ত পাহাড়-সমতলে যে সব গোলমালের ঘটনা ঘটেছে, তার অবিলম্বে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন।
তৃণমূল নেতারা অবশ্য বিনয় তামাঙ্গের এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলছেন, ‘‘পাহাড়-সমতলে সমান চাপে পড়ে এখন উল্টো কথা বলছে মোর্চা। সবাই জানে রোজ পাহাড়ে কারা গোলমাল চালিয়ে যাচ্ছে। সমতলে সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাতে পথে নেমেছেন। সেই অধিকার তো তাঁদের রয়েছে।’’