Rashid Khan

Ustad Rashid Khan: লক্ষ্য ছিল ছেলে আরমান! হুমকি পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন সস্ত্রীক রাশিদ

রাশিদ খান আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বারবার ফোন আসতে থাকে আমার মেয়ের মোবাইলে। ফোনে টাকা চাওয়া হয়। হুমকি দেওয়া হয়। প্রথমে পাত্তা দিইনি।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২১ ১৩:০২
Share:

জয়িতা বসু খান ও উস্তাদ রাশিদ খান ফাইল চিত্র

চতুর্থীর বিকেল। হঠাৎ অচেনা নম্বর থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ ফোন আসে উস্তাদ রাশিদ খান-এর মেয়ের মোবাইলে। তাঁর কাছে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। না হলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে রাশিদ বলেন, ‘‘বার বার ফোন আসতে থাকে আমার মেয়ের মোবাইলে। ফোনে টাকা চাওয়া হয়। বলা হয় ছেলে আরমানকেও লক্ষ্য করা হচ্ছে। এ সব শুনে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। আমার মেয়ে সুহাকে ওরা বলেছিল, ‘তোর একটাই ভাই। ওকে শেষ করে দেব।’’’

Advertisement

রাশিদের স্ত্রী জয়িতা বসু খান বলেন, ‘‘৯ অক্টোবর থেকে এই ফোন আসছে। খুব খারাপ পুজো কাটল আমাদের। কোথাও বেরতে পারিনি।’’ বার বার এই ফোন আসার জেরে চিন্তিত হয়ে পড়েন রাশিদও। বলছেন, ‘‘শুরুর দিকে পাত্তা না দিলেও যখন আমার মেয়ের ফোনে বার বার হুমকি আসতে থাকে, তখন খানিক চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। তার পরই পুলিশকে জানাই। আমার মেয়ের হাত-পা ভয়ে থরথর করে কাঁপছিল। ওরা এমনও বলেছিল, ড্রোন দিয়ে নাকি হামলা করবে! এ সবই আমরা পুলিশকে জানাই।’’

ধৃত অবিনাশ ও দীপক নিজস্ব চিত্র

জয়িতার কথায়, ‘‘এমন পুজো যেন কারও জীবনে না আসে। পুজো নিয়ে রাশিদের একটা আলাদা অনুভূতি রয়েছে। এ বার দশমীর আগে ও বাড়ি থেকে বেরতে পারেনি। মাঝে মধ্যেই অচেনা নম্বর থেকে ফোন এসেছে। লক্ষ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছে। তবে পুলিশকে বলামাত্র ওরা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। হুমকি ফোনে বলা হয়েছিল, বাড়ির বাইরে বন্দুকবাজ ঘুরে বেড়াচ্ছে। বেরোলেই গুলি করা হবে। নেতাজিনগর থানায় জানানো হলে ওরা দ্রুত পদক্ষেপ করে। আমাদের নিরপত্তা দেয়।’’

Advertisement

রাশিদকে প্রাণনাশের হুমকি এবং তাঁর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা তোলা চাওয়ার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই ব্যক্তির নাম অবিনাশকুমার ভারতী এবং দীপক অওলাখ। ২৪ বছরের অবিনাশ বিহারের বেগুসরাইয়ের সালাউনা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রাশিদের গাড়িচালক ছিলেন। বছর কুড়ির দীপক উত্তরপ্রদেশের আমরোহার বাসিন্দা। দীপক রাশিদের অফিসে কিছু দিন কাজ করেছেন। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁদের শহরে আনা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতরা জানিয়েছেন, আক্রোশবশত হুমকি-ফোন করেছেন তাঁরা। পরিচয় লুকোতে মোবাইল নম্বর ‘মাস্কিং’ করে ফোন করেন অভিযুক্তরা। শেষ পর্যন্ত মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন দেখে তাঁদের সন্ধান পায় কলকাতা পুলিশ।

রাশিদের অফিসে কিছু দিন কাজ করে দীপক উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়ি চলে যান। এর পর হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে নম্বর গোপন করে ফোন করে তাঁর কন্যাকে হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্ত। বলা হয়, ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রথমে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন দীপক। পরে ২০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। টাকা না পেলে রাশিদ এবং তাঁর পুত্রকে খুন করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। রাশিদ এবং তাঁর পরিবারের গতিবিধি সম্পর্কে দীপককে বিস্তারিত খবর দিতে থাকেন অবিনাশ।

বারবার হুমকি ফোন আসার পর নেতাজিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় রাশিদের পরিবারের তরফে। পুলিশ তদন্তে নেমে দু’টি টেলিফোন নম্বরের হদিশ পায়। সেই সূত্র ধরে ওই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে ওই দুই অভিযুক্তকে ধরা হয়। আপাতত ওই দুই অভিযুক্ত পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন