মোদীর ডাকে সাড়া, দায়িত্বে আরও ৫০ গ্রাম

আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে নতুন করে  ৫০টি গ্রাম অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে অধিগৃহীত গ্রামের সংখ্যা হবে ১০০।

Advertisement

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৮ ০১:১৮
Share:

আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে নতুন করে ৫০টি গ্রাম অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে অধিগৃহীত গ্রামের সংখ্যা হবে ১০০।

Advertisement

গত ২৫ মে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোদীর বক্তব্যে উঠে এসেছিল গ্রাম পুনর্গঠনে কবিগুরুর দর্শনের কথা। তার পরেই বিশ্বভারতীর অধীনে থাকা ৫০টি গ্রামের কাজ নিয়ে যেমন প্রশংসা করেছিলেন, তেমনই প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষ পূর্তির আগে
গ্রামের সংখ্যাও বাড়ানোর আহ্বান জানান। এই আহ্বানে অনুপ্রাণিত হয়েই আরও ৫০টি গ্রাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।

রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতন। কবির বহু দিনের স্বপ্নলালিত পল্লি-পুনর্গঠনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ১৯২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কুঠিবাড়িতে শুরু হয়েছিল ইনস্টিটিউট অফ রুরাল রিকনস্ট্রাকশনের কাজ, নাম পায় শ্রীনিকেতন। শান্তিনিকেতন থেকে মাইল দুয়েক দূরে শ্রীনিকেতনেই প্রাণ পেতে থাকে রবীন্দ্রনাথের গ্রামীণ ভাবনা। সেই সময় পার্শ্ববর্তী ছ’টি গ্রামকে নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল। ক্রমে সেই সংখ্যাই হয়েছে ৫০টি। বিশ্বভারতীর জীবনব্যাপী শিক্ষা ও সম্প্রসারণ বিভাগ বর্তমানে বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লক ও ইলামবাজার ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মোট ৫০টি গ্রাম নিয়ে কাজ করছে। এ বার সেই সংখ্যাটাই বেড়ে ১০০টি হবে।

Advertisement

গ্রামের সার্বিক উন্নয়নে বিশ্বভারতীর জীবনব্যাপী শিক্ষা ও সম্প্রসারণ বিভাগ ইতিমধ্যেই রাইপুর, বিনুরিয়া, ইসলামপুর, পারুলডাঙা, বল্লভপুর, খোসকদমপুর, গোয়ালপাড়া সহ ৫০টি গ্রাম নিয়ে কাজ করছে। সার্বিক উন্নয়নের জন্য গঠন করা হয়েছে ৪০টি গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা, ১২টি মহিলা সমিতি, ৩৬টি গ্রামীণ পাঠাগার। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় আলোচনা সভা, উৎসব-অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মানুষদের সচেতন করার কাজ সব সময় চলছে। সুবিধার জন্য কয়েক’টি গ্রাম নিয়ে ক্লাস্টার অনুযায়ী ভাগ করা হয়েছে।

বিশ্বভারতীর জীবনব্যাপী শিক্ষা ও সম্প্রসারণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুজিতকুমার পাল জানালেন, নতুন যে গ্রামগুলিকে গ্রহণ করা হবে সেগুলিকেও ক্লাস্টার অনুযায়ী ভাগ করে সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করা হবে। বেশ কিছু বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থাকেও এই কাজের জন্য উজ্জীবিত করা হবে। গ্রাম ঘুরে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পগুলি সম্পর্কে জানানো হবে। সুজিতবাবু আরও বলেন, ‘‘বোলপুর-শ্রীনিকেতন ও ইলামবাজার ব্লকেরই আরও কিছু গ্রামের সার্বিক উন্নয়নের দায়িত্ব আমরা নেব। তবে এ বার বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হবে ইলামবাজারের চৌপাহাড়ি জঙ্গল এলাকা।’’

ইলামবাজার চৌপাহাড়ি জঙ্গল সংলগ্ন শুধুমাত্র আদিবাসী গ্রাম রয়েছে প্রায় ১২টি। ধল্লা, রাঙাবাঁধ, বনশুলি, খয়েরডাঙা, আমখই সবই আদিবাসী গ্রাম। কবে বিশ্বভারতী তাঁদের গ্রামগুলি নিয়ে কাজ শুরু করবে, সেই আশায় দিন গুনছেন রুবি হেমরম, জিতেন মাড্ডি, সুনীল বেসরা ও ছোট্টু মুর্মুরা। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের কথায়, ‘‘আচার্যের নির্দেশ অনুযায়ী আরও ৫০টি গ্রাম গ্রহণ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন