Amartya Sen

জমি বিতর্কে অমর্ত্যকে ‘আলোচনারও’ বার্তা

বিশ্বভারতী এ দিন তাদের পুরনো দাবিই নতুন করে জানিয়েছে। তাদের আরও দাবি, বিভিন্ন নথি থেকে স্পষ্ট যে, ১.৩৮ একর জমি কখনওই প্রয়াত আশুতোষ সেনকে লিজ় দেওয়া হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৯
Share:

অমর্ত্য সেন। ফাইল চিত্র।

অমর্ত্য সেন ও বিশ্বভারতীর জমি বিতর্কের মাঝেই সামনে এসেছে সরকারি নথি। যা থেকে দেখা যাচ্ছে, অমর্ত্য সেনের পরিবারকে ১.৩৮ একর জমি লিজ়ে দিয়েছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই রবিবার প্রেস বিবৃতি দিয়ে বিশ্বভারতী জানাল যে, অধ্যাপক সেনকে তাঁর ‘আত্মগরিমা ও বিশ্বভারতীর সুনাম’ রক্ষা করার জন্য যা করা দরকার, তা করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে দু’টি পথের কথা বলেছেন। সেখানে প্রকারান্তরে তাঁদের সঙ্গে আলোচনার বার্তাও দেওয়া হয়েছে। তবে এই ব্যাপারে অমর্ত্যের কী বক্তব্য, তা জানা সম্ভব হয়নি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, ‘প্রতীচী’ বাড়ি থেকে জানানো হয়, তিনি কাজে ব্যস্ত আছেন।

Advertisement

এ দিন বিশ্বভারতীর তরফে আর অমর্ত্যকে চিঠি দেওয়া হয়নি। বরং একটি প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জমি সংক্রান্ত এই বিতর্ক নিরসনে দু’টি পথ খোলা আছে। হয় আইন-আদালতের হস্তক্ষেপ অথবা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা। তাতেই এই বিতর্কের ‘অবাধ ও খোলাখুলি’ সমাধান করা যাবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জমিটি নিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বিশ্বভারতীকে কেন্দ্র করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে যাঁরা কাদা ছোঁড়াছুড়ি করছেন, তার তীব্র নিন্দা করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার প্রশাসনের তরফে একটি নথি প্রকাশ করে দেখানো হয়, ১.৩৮ একর জমি পুরোটাই অমর্ত্যের বাবা আশুতোষ সেনের নামে লিজ় দেওয়া হয়েছিল। যা এর আগে করা বিশ্বভারতীর দাবিকে (যে, ১.৩৮ একরের মধ্যে ১৩ শতক এলাকা লিজ় বহির্ভূত) খারিজ করে দেয়। এর পরে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পাশে দাঁড়ান। পক্ষান্তরে, বিজেপির একাংশ নেতাও অমর্ত্যের প্রতি কটূক্তি করেন। বিশ্বভারতী বিজেপি নেতা-সহ এঁদের সবাইকে নিশানা করেছে কি না, তা অবশ্য তাদের এ দিনের বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়নি। তবে বীরভূম সফরে গিয়ে অমর্ত্যের সঙ্গে দেখা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমন ইঙ্গিত এর মধ্যেই মিলেছে।

বিশ্বভারতী এ দিন তাদের পুরনো দাবিই নতুন করে জানিয়েছে। তাদের আরও দাবি, বিভিন্ন নথি থেকে স্পষ্ট যে, ১.৩৮ একর জমি কখনওই প্রয়াত আশুতোষ সেনকে লিজ় দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ১.২৫ একর জমি লিজ় দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার পাল্টা প্রশ্ন, “তা হলে যে নথি আমাদের কাছে এসেছে তা কি মিথ্যা?”

Advertisement

বিশ্বভারতীর বক্তব্য, ‘১৯৪৩ সালে বিশ্বভারতী ও আশুতোষ সেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত লিজ়ের নিবন্ধিত দলিল ও ২০০৬ সালে কর্মসমিতির রেজোলিউশন থেকেই স্পষ্ট, আশুতোষ সেন বা অমর্ত্য সেনকে ১.৩৮ একর জমি তো দূর, বিশ্বভারতীর কোনও জমিরই মালিকানা দেওয়া হয়নি।’’ বিশ্বভারতীর আরও দাবি, শান্তিনিকেতনের প্রতীচী নামের পরিচিত প্রাঙ্গণে অধ্যাপক সেনের বাসভবন সম্পূর্ণরূপে বিশ্বভারতীর মালিকানাধীন জমিতে অবস্থিত। অধ্যাপক সেন ২০১৬ সালে সেই বাসভবনে কিছু সংযোজন ও পরিমার্জন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই আবেদন জানিয়েছিলেন বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের কেউ এ দিন বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে মুখ খুলতে চাননি। তবে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এর আগে যে নথি তারা প্রকাশ করেছে, সেখানেই দেখা যাচ্ছে বিশ্বভারতীর দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন