—ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতীর ‘কর্মসংস্কৃতি’ ফেরাতে তিনটি সিদ্ধান্ত নিলেন কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিকেলে জরুরি ভিত্তিতে ডাকা বৈঠকের পরে ওই পদক্ষেপ করার কথা জানানো হয়।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার জানান, সমস্ত দফতরে এ বার থেকে ‘বায়োমেট্রিক’ পদ্ধতিতে কর্মীদের উপস্থিতি নথিভুক্ত করা হবে। কোনও কর্মী কখন এলেন বা কখন বেরিয়ে গেলেন, তা দেখার জন্য দফতরের মূল দরজাগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মীদের কাজের সময়সীমা সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত। অনির্বাণবাবু জানান, এ বার থেকে তার পরে কেউ ‘ওভারটাইম’ কাজ করলেও আলাদা ভাবে সে জন্য পারিশ্রমিক দেওয়া হবে না। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতেই এই উদ্যোগ। তা ছাড়া বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগ থেকে কর্মীদের উপস্থিতি খাতা সকাল ১০টার মধ্যে কর্মসচিবের দফতরে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। তবে আপাতত এই সব সিদ্ধান্ত অধ্যাপকদের জন্য প্রযোজ্য হচ্ছে না।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে কাজের সময় শুরু হয় সকাল সাড়ে ৯টায়। কোনও ছুটির সময় পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও দফতরগুলি খোলা থাকে। শনিবার কাজের সময় শুরু হওয়ার কিছু পরেই অডিট ও অ্যাকাউন্টস অফিস পরিদর্শন করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি দেখেন, অফিসে হাতেগোনা কয়েক জন উপস্থিত রয়েছেন। এর পরেই এ দিন বিকেলে তিনি কর্মসচিব, ইন্টারনাল মেম্বারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ বিষয়ে উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিশ্বভারতীতে কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে এ ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। এখানকার একটা বড় অংশ জুড়ে কর্মীরা রয়েছেন। তাঁদের দায়বদ্ধ হতেই হবে। সকালের ঘটনায় আমার নিজের ভীষণ খারাপ লেগেছে।’’ তিনি আরও জানান, বিশ্বভারতীতে যোগ দেওয়ার পরে প্রথম দিকে প্রায়ই দফতর, বিভাগগুলি পরিদর্শনে যেতেন। এর ফলে সেই সময় নিয়ম মেনে কর্মীদের আসা-যাওয়া শুরু হয়েছিল। কিছু দিন পরিদর্শন বন্ধ করতেই অনিয়ম শুরু হওয়ার খবর পেয়েছিলেন তিনি। এর পরেই এ দিন হঠাৎ অফিস পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেন। বিদ্যুৎবাবু জানান, কর্মীরা কেন এমন করলেন সেই প্রশ্ন করলে প্রায় আধঘণ্টা কোনও উত্তর মেলেনি। এর পরে কর্মীরা নিজেরাই ভুল স্বীকার করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খুব দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান তিনি। বিদ্যুৎবাবু আরও জানান, পরিদর্শনের সময় তাঁর নজরে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মী হাজিরা খাতায় আজ, রবিবারের সই আগাম করে গিয়েছেন। তাঁদের শো-কজ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ওই সিদ্ধান্তগুলির বিষয়ে কর্মিসভার সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা শুরু করতে হলে কর্মী এবং অধ্যাপক— সবার জন্যই করতে হবে। শুধু কর্মীদের জন্য বায়োমেট্রিকের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না। এ বিষয়ে আগেও উপাচার্যের সঙ্গে কথা হয়েছিল। ১৯ মে আমরা একটি স্মারকলিপি জমা দেব।’’