কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যখন বাংলা জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে বিপরীত মেরুতে থাকলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তাঁর পরামর্শ, এ ব্যাপারে নেতিবাচক ভাবনাকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। তাতেই সুফল মিলবে।
মঙ্গলবার কলকাতায় বণিকসভা অ্যাসোচেমের নতুন ভবনের শিলান্যাস অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে বিদ্যুৎমন্ত্রী তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল। সেখানেই রাজ্যপাল নোট বাতিলের প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কালো টাকার বিপদ ঠেকাতে সম্প্রতি সরকার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করেছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির হার যেমন কমবে তেমনই বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হবে।’’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,‘‘একটি প্রগতিশীল অর্থনীতিতে কখনও সংস্কারে অ্যালার্জি থাকা ঠিক নয়। নেতিবাচক মনোভাব ছেড়ে নিজেদের ক্ষমতার ওপর আস্থা রাখতে হবে। সমস্যাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখলে দেখলে ভাল ফল পাওয়া যায়।’’
রাজ্যপালের এই সবক রাজ্যের শাসক দল যে ভালো ভাবে নিয়েছে তা নয়। রাজ্যপালের মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া না দিলেও শোভনদেববাবু বলেন,‘‘কালো উদ্ধারের বিরুদ্ধে আমরাও নই। কিন্তু গরিব মানুষকে হয়রান করে যে হঠকারী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা মেনে নেওয়া
যায় না।’’
প্রসঙ্গত, সরকারের কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন পক্ষে-বিপক্ষে রাজনীতির পরিবেশ উত্তপ্ত, তখন সাংবিধানিক পদে থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রকাশ্যে মত প্রকাশ করা উচিত নয় বলে রাজনীতিকদের অনেকেই মনে করেন। এ ব্যাপারে খোদ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এতটাই রক্ষণশীল যে লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে তিনি তাঁর ভোটাধিকারও প্রয়োগ করেননি! কিন্তু তাঁর পথের সঙ্গে ইদানীং রাজ্যপালদের অনেকেরই অবস্থানের ফারাক হচ্ছে। রাজনৈতিক বিষয়েও তাঁদের অনেকে খোলাখুলি মত প্রকাশ শুরু করেছেন। এমনকী ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় বিভিন্ন বিষয়ে এখন সোশ্যাল মিডিয়াতেও মত প্রকাশ শুরু করেছেন। তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, ব্যতিক্রমী রইলেন না বাংলার রাজ্যপালও। নোট বাতিল নিয়ে উনি কার্যত মোদী সরকারের প্রচারে নেমে পড়লেন।