State News

ছাঁট লোহা নিয়ে পাসোয়ান-ভাইদের সঙ্গে টক্কর নিতে গিয়েই কি ব্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা খুন?

এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ছাঁট লোহার কারবার নিয়ে পাসওয়ান-ভাইদের সঙ্গে পুরনো শত্রুতা ছিল দিলীপের। সেই শত্রুতার কারণেই এই খুন কি না তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

Advertisement

সোমনাথ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ২০:০২
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আঁটঘাট বেঁধেই খুন করা হয়েছে ব্যান্ডেলের ডাকাবুকো তৃণমূল নেতা দিলীপ রামকে। কোন সময়ে দিলীপকে একা পাওয়া যাবে, আগে থেকেই তৈরি ছিল তার ‘ব্লু-প্রিন্ট’। তার পর হিসেব কষেই ব্যান্ডেলের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ’ থেকে দিলীপের মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ীরা।

Advertisement

এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ছাঁট লোহার কারবার নিয়ে পাসওয়ান-ভাইদের সঙ্গে পুরনো শত্রুতা ছিল দিলীপের। সেই শত্রুতার কারণেই এই খুন কি না তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

দিলীপ পূর্ব রেলে চাকরি করতেন। নৈহাটিতে কর্মরত ছিলেন। সেই সূত্রে ছাঁট লোহার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দিলীপের যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ। এ নিয়ে লালা পাসওয়ান এবং তাঁর ভাই বিজুর সঙ্গে বিরোধিতা ছিলই। কিন্তু চুঁচুড়া বিধানসভা তৃণমূলের দখলে থাকায় এবং দিলীপের স্ত্রী ঋতু সিংহ ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের প্রধান হওয়ায়, পাসওয়ান-ভাইরা ছাঁট লোহার কারবারে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে নতুন করে এলাকা দখলে নামে বিজু। স্থানীয়দের একাংশের মত, জেলে থাকা লালার নির্দেশেই ভাই বিজু এলাকায় নতুন করে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ব্যান্ডেল স্টেশনে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন তৃণমূল নেতাকে, অভিযোগের তির বিজেপির দিকে

কয়েক দিন আগেই দিলীপের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে হুমকিও দেয় বিজু। নিহতের স্ত্রী ঋতু নিজেই সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। কিন্তু কী কারণে তারা বন্দুক দেখিয়ে ভয় দেখাতে গেল, তা অবশ্য জানা যায়নি। নিহতের স্ত্রী দাবি করেছেন, এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেনি তারা। শুধু ঋতুই নন, চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারও একই সুরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, পুলিশের অপদার্থতার কারণেই খুন হতে হয়েছে দলীয় কর্মীকে। এ নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সবিস্তার রিপোর্ট দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন।

‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রে়ঞ্জ’ থেকে গুলি করা হলেও, মাথা ফুঁড়ে গুলি বেরিয়ে যায়নি। আটকে গিয়েছে। পরে সেই গুলি দেখে পুলিশের অনুমান, ওই বুলেট মুঙ্গেরে তৈরি বন্দুকের। আততায়ী ভিন রাজ্যের বলেও প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, সুপারি কিলার দিয়ে খুন করা হয়েছে দিলীপ রামকে।

আরও পড়ুন: পুলিশ-নির্ভর না হয়ে ঝাঁপান, দলকে বার্তা মমতার

এই খুনের ঘটনায় বিজু পাসওয়ানের পাশাপাশি সঞ্জয় সিংহ, অর্জুন সিংহের নামও উঠে আসছে। মৃতের পরিবার দাবি, বিজু এর আগেও দিলীপকে হুমকি দিয়েছিল। অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কেন পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর প্রতিবাদে এ দিন চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে দিলীপের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় জিটি রোডের উপরে অবরোধ করেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার পর পুলিশের সমন্বয়ের অভাবে অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে ৩ ঘণ্টা লেগে যায়। তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া গেলে, দিলীপকে বাঁচানো যেত বলে দাবি করেছে দিলীপের পরিবার। এই ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই চুঁচুড়া বন্‌ধের ডাক দিয়েছে তৃণমূল।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন