Uttarpara

সবাই দেখছে পুকুর, কিন্তু নথিতে বাস্তুজমি, ফলে ভরাটে আর বাধা কী!

রাতারাতি সেটা কাগজে কলমে উধাও পুকুর। বদলে গেল বাস্তু জমিতে! তারপর?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:৩২
Share:

এই পুকুরই এখন বাস্তু জমি! —নিজস্ব চিত্র।

কয়েক দশক ধরে এলাকার মানুষ যেটা পুকুর বলে জানতেন, রাতারাতি সেটা কাগজে কলমে উধাও। পুকুর বদলে গেল বাস্তু জমিতে!

Advertisement

প্রশাসনের নাকের ডগায় সেই জলাশয় সবার চোখের সামনে ভরাট চলছে। এলাকার মানুষ বার বার অভিযোগ জানানোর পরেও কাজ বন্ধ করেনি পুরসভা থেকে শুরু করে প্রশাসন। এমনটাই অভিযোগ উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের।

সেখানকার বাসিন্দারা জানান, সরোজনাথ মুখোপাধ্যায় স্ট্রিট এবং জেকে স্ট্রিটের সংযোগস্থলে একটি পুকুর আছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সেই পুকুরটি ভরাটের কাজ চলছে। ওই এলাকার বাসিন্দা সাক্ষী ঘোষ হাজরা বলেন, ‘‘প্রায় ২৯ কাঠা জমিটি ছিল সরোজ মুখোপাধ্যায়দের পরিবারের। তার মধ্যেই আমরা জন্ম থেকে সাত কাঠার পুকুরটি দেখছি। কয়েক মাস আগে সেই জমি হস্তান্তর হয়ে যায়। স্থানীয় এক প্রোমোটার সুশীল সিংহ জমি কিনেই ওই পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করেন।”

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যকেও ‘আরবান নকশাল’ খুঁজতে বলল কেন্দ্র

এলাকার অন্য এক বাসিন্দা আশিসকুমার ঘোষাল উত্তরপাড়া থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন, গত সাত দিন ধরে ভরাটের কাজ চলছে। ট্রাকে করে বালি নিয়ে এসে ভরাট চলছে। রাতেও চলছে কাজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভরাট শুরুর দিন থেকে পুরসভাতে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।

দেখুন সেই পুকুর ভরাটের ভিডিয়ো

ওই ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অদিতি কুণ্ডু। তিনি উপ পুরপ্রধানও বটে। তিনি বলেন, “স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘটনাটি জেনেছি। তবে প্রোমোটার আমাদের যে নথি জমা দিয়েছেন সেখানে ওই অংশটি পুকুর হিসাবে উল্লেখ নেই। আমরা অভিযোগকারীদেরও বলেছি তাঁদের অভিযোগের স্বপক্ষে নথি জমা দিতে। আমরা কখনই কোনও বেআইনি কাজে মদত দেব না।” অদিতিদেবী নিজেও স্বীকার করে নেন, তিনি ওই এলাকার দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা। এত দিন তিনি জায়গাটি পুকুর হিসাবেই জানতেন। কী ভাবে জলজ্যান্ত পুকুরটা উধাও হয়ে গেল নথিতে? তিনি জবাব দিতে পারেননি।

আরও পড়ুন: আকাল চাকরির, বহু আসন ফাঁকা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে

স্থানীয় বাসিন্দারা উত্তরপাড়া থানা ছাড়াও জেলা মৎস্য দফতরের সহকারি অধিকর্তা এবং শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসকের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, যে প্রোমোটার সুশীল সিংহ এই ভরাটের কাজ করছেন তিনি শাসক দলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত।

প্রোমোটার সুশীল সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, জমির ওই অংশটি পুকুর নয়। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে পর্যাপ্ত নথি রয়েছে। তাঁর কথায়, “আমি পুরসভার কাছে নথি জমা দিয়েছি। প্রয়োজনে আরও নথি জমা দেব।”

(দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি, নদিয়া-মুর্শিদাবাদ, সহ দক্ষিণবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের খবর পেয়ে জান আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন