অনীহা যাত্রীদেরই, তাই শিকেয় উঠেছে জলপথের নিরাপত্তা

গত বছর পরপর তেলেনিপাড়া ঘাটে এবং ইছাপুর দেবীতলা ঘাটে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এর পরেই উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলির মধ্যে নদী পরিবহণের নিয়ম কিছুটা কড়া করে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০৯
Share:

যাত্রীদের সুরক্ষার কথা ভেবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল লাইফ জ্যাকেট। কিন্তু অভিযোগ, তাঁরা তা গায়ে তুলতেই রাজি নন। যাত্রীদের ব্যাখ্যা, অপরিষ্কার থাকে সেগুলি। ফলে কার্যত শিকেয় উঠছে যাত্রীদের এই সুরক্ষা ব্যবস্থা।

Advertisement

গত বছর পরপর তেলেনিপাড়া ঘাটে এবং ইছাপুর দেবীতলা ঘাটে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এর পরেই উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলির মধ্যে নদী পরিবহণের নিয়ম কিছুটা কড়া করে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ১৪টি বড় ফেরিঘাটের কয়েকটিতে ভেসেল চলে। বাকিগুলোয় চলে ভুটভুটি। মূলত অফিসযাত্রী এবং পড়ুয়াদের ভিড়ের কথা ভেবেই প্রতি নৌকায় লাইফ জ্যাকেট ও বাঁশি রাখার
ব্যবস্থা হয়েছিল।

টিকিট কাউন্টারের পাশে নিয়মাবলির তালিকায় লেখা হয়, লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক বলে। নিয়ম রয়েছে তালিকাতেই। অভিযোগ, প্রথম দিকে জ্যাকেটগুলি পরা হলেও, তা থেকে বাঁশি এবং জ্যাকেট আটকানোর ক্লিপ চুরি হত। জগদ্দল, খড়দহ বা বরাহনগর
ঘাটের অধিকাংশ কর্মীরই ক্ষোভ, যাত্রীদের জ্যাকেট পরাতে বাধা
পাওয়া নিয়েও।

Advertisement

কর্মীদের দাবি, সেগুলি যাত্রীদের দেওয়া ও নেওয়ার জন্য বাড়তি লোক নিয়োগ হচ্ছিল। অভিযোগ, যাত্রীরা তা পরতে চাইছিলেন না। উপরন্তু জ্যাকেট অন্য পারে পৌঁছনোর পরে, তা ছেঁড়া বা বাঁশি না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও সদুত্তর মিলত না। তাই জ্যাকেট দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে কয়েকটি ঘাটে। যাত্রীদের অভিযোগ, জ্যাকেটগুলো মাটিতে স্তূপ করে রাখায় ধুলো, নোংরা লাগা থাকে। তাই কেউ পরতে চান না।’’

সম্প্রতি উত্তর ব্যারাকপুর পুর এলাকায় ঘাট পরিদর্শন করেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কোন্নগর ও শ্রীরামপুর ঘাটের কর্মীরা যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরার অনীহার কথা বলেন মন্ত্রীকে। তাঁরা আরও জানান, অন্যের গায়ে দেওয়া জ্যাকেট নিজেদের পোশাকের উপরে চাপাতে না চান না বেশির ভাগ যাত্রী। প্রথম দিকে হাতে নিলেও, যাত্রাপথে কেউ লাইফ জ্যাকেট গায়ে তুলতেন না। সব শুনে মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘নিরাপত্তার স্বার্থে লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করা উচিত। সেগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।’’

কিন্তু নিয়মিত জ্যাকেটগুলি লন্ড্রিতে পাঠিয়ে পরিষ্কার করতে যে অর্থ এবং সময় লাগবে, তাতেই প্রশ্ন উঠছে নির্দেশিকার কার্যকারিতা নিয়ে। ফলে শুরুতেই শিকেয় উঠতে চলেছে জলপথে যাত্রী-সুরক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন