প্রতি বছরই পরীক্ষার ফল নিয়ে প্রচুর মামলা-মকদ্দমার চক্করে পড়তে হয় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে। ফল নিয়ে অসন্তুষ্ট পড়ুয়ারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় সংসদেরও ঝক্কি বাড়ে।
তাই ফলাফল নিয়ে মামলা আর চাইছে না সংসদ। এই ধরনের সমস্যা নিয়ে পরীক্ষার্থীরা আদালতে পৌঁছনোর আগেই সদর্থক মীমাংসা করতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। প্রয়োজনে ফলাফল সংক্রান্ত সমস্যায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন সংসদ-সভানেত্রী মহুয়া দাস স্বয়ং।
সংসদ-সভানেত্রী শুক্রবার জানান, মামলার দরুন চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়টি অনেক দীর্ঘায়িত হয়ে যায়। মামলা চালাতে গিয়ে অযথা খরচও বাড়ে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ারও ফল পেতে সময় চলে যায়। এই সব সমস্যা এড়াতে সংসদ এ বার অনেক বেশি তৎপর হয়েছে। প্রয়োজনে পড়ুয়া এবং তাঁদের অভিভাবকদের ডেকে তিনি নিজে কথা বলছেন। এর ফলও বেশ সন্তোষজনক বলে সংসদ-প্রধানের দাবি। মামলার সংখ্যাও অনেক কমে গিয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী পড়ুয়া প্রকাশিত ফলাফলে সন্তুষ্ট না-হলে রিভিউ বা স্ক্রুটিনির জন্য আবেদন করেন। তাতেও তুষ্ট না-হলে তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী উত্তরপত্র দেখার জন্য আবেদন করেন। সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে তখন অভিভাবক-সহ সংসদের আঞ্চলিক অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। বিস্তারিত ভাবে সব কিছু জানানো হয় তাঁকে। সংসদ-সভানেত্রী জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পড়ুয়া এবং তাঁর পরিবার সব কিছু জেনে সন্তুষ্ট হন। কিন্তু কেউ কেউ আবার আদালতে চলে যান।
কিন্তু এখন মামলা এড়াতে প্রয়োজনে সংসদ-সভানেত্রী নিজে পড়ুয়া এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। ‘‘পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আমাদের আদালতে দেখা হোক, এটা আমরা সত্যিই চাই না। ওদের সঙ্গে তো আমাদের সেই সম্পর্ক নয়। তাই কয়েক বছর আমরা নিজেরাই অভিযোগ নিরসনের চেষ্টা করছি। এতে ফল পেয়েছি। মামলার সংখ্যা কমে এসেছে,’’ বললেন মহুয়াদেবী।
এত কিছুর পরেও সন্তুষ্ট না-হয়ে অনেক পড়ুয়া চান, উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়ন করা হোক। সভানেত্রী জানান, পুনর্মূল্যায়নের দাবি তাঁরা মানেন না। ‘‘এক জন পরীক্ষক খাতা দেখেছেন। সেই মূল্যায়ন বাতিল করে দিয়ে নতুন করে খাতা দেখতে দেওয়াটা আমরা হতে দিই না। পরীক্ষকদের উপর সেই আস্থা আমরা রাখি,’’ বলছেন সংসদ-প্রধান। সেই সঙ্গেই তিনি জানান, খাতা দেখে নম্বর যোগের ক্ষেত্রে ভুল, ট্যাবুলেশনে ভুল হয়েছে কি না— এগুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। পড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে নতুন মার্কশিট দেওয়ার ব্যবস্থাও করে সংসদ।