সবুজ সঙ্কেত মমতার

আয় বাড়াতে বণ্টন সংস্থার বিলে বিজ্ঞাপন

সিইএসসি বিদ্যুতের বিলে বিজ্ঞাপন নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে দীর্ঘদিন আগে। এ বার সেই রাস্তা নিচ্ছে রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাও। বিদ্যুতের বিলে তারা অন্যান্য সংস্থার বিজ্ঞাপন ছাপবে আয় বাড়ানোর জন্যই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩৭
Share:

সিইএসসি বিদ্যুতের বিলে বিজ্ঞাপন নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে দীর্ঘদিন আগে। এ বার সেই রাস্তা নিচ্ছে রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাও। বিদ্যুতের বিলে তারা অন্যান্য সংস্থার বিজ্ঞাপন ছাপবে আয় বাড়ানোর জন্যই।

Advertisement

শুধু বিদ্যুতের বিলেই বিজ্ঞাপন নয়। বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের দেওয়াল এবং বিদ্যুতের খুঁটিও ভাড়া দিতে চায় বণ্টন সংস্থা। এই কাজে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অব্যবহৃত জমিও ব্যবহার করতে দিতে তারা প্রস্তুত। ভাল দাম পেলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফাঁকা জমি টাওয়ার বসানোর জন্য ভাড়া দেওয়া হবে বিভিন্ন মোবাইল সংস্থাকে। আয় বাড়াতে বণ্টন সংস্থার এই প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বিদ্যুৎ দফতরের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই সব প্রস্তাবই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিছু কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মতিও দিয়েছেন।’’

Advertisement

কলকাতা ও হাওড়ার কিছু অংশ বাদ দিলে (সিইএসসি এলাকা) রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে বণ্টন সংস্থার বিদ্যুৎ পরিকাঠামো। রয়েছে অসংখ্যা ছোট-মাঝারি সাবস্টেশন আর ট্রান্সফর্মার। সর্বোপরি আছেন সংস্থার এক কোটি ৬৫ লক্ষ গ্রাহক। তিন মাস অন্তর এই বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের ঘরে বণ্টন সংস্থার বিল যায়। এ ছাড়াও জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক এবং জেলা শহরের আশেপাশে রাস্তার ধারে রয়েছে অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি। বণ্টন সংস্থার কর্তাদের মতে, যে-কোনও বৃহৎ কোম্পানির কাছেই এগুলো লোভনীয় প্রচারের জায়গা হতে

পারে। সিইএসসি বহু বছর ধরেই গ্রাহকদের বিলে অন্যান্য সংস্থার বিজ্ঞাপন নিচ্ছে। তাদের নিজস্ব প্রচারের কাজে লাগানো হয় ট্রান্সফর্মারের খুঁটিকেও। এত দিনে সেই পথে হাঁটতে চাইছে বণ্টন সংস্থা।

রাজ্যের বিদ্যুৎকর্তাদের বক্তব্য, বিভিন্ন সংস্থা এখন গ্রামাঞ্চলে হোর্ডিং, ব্যানার, দেওয়াল-লিখন, প্রচারপত্র বিলি করে নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বণ্টন সংস্থার পরিকাঠামোকে প্রচারের কাজে ব্যবহার করতে দিলে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদক সংস্থা আগ্রহী হবে। তাতে আয় বাড়বে বণ্টন সংস্থার। বিদ্যুৎমন্ত্রীর দাবি, অনেক মোবাইল সংস্থা এখনও টাওয়ার বসানোর জায়গা পাচ্ছে না। ‘‘টাওয়ার বসাতে খুব বেশি জায়গা লাগে না। মোবাইল সংস্থাগুলি আমাদের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের অব্যবহৃত জমি তারা অনায়াসেই ভাড়া নিতে পারে,’’ বলছেন শোভনদেববাবু।

বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করে কত আয় হতে পারে, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা সেই হিসেব করে উঠতে পারেননি। তবে তাঁদের বক্তব্য, বিদ্যুতের বিলে, সাবস্টেশনের দেওয়ালে বা খুঁটিতে অন্যান্য সংস্থার পণ্যের বিজ্ঞাপন নিলে তো বাড়তি কোনও খরচ হবে না। আদৌ কিছু খরচ না-করে কোষাগারে যা আসে, তার পুরোটাই লাভ। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধমতও রয়েছে। বিদ্যুৎ চুরি-সহ বিভিন্ন কারণে প্রতি বছর বণ্টন সংস্থার যে-পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়, তাতে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের অঙ্কটা কার্যত চোখে দেখা যাবে না বলে মত বিরুদ্ধবাদীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন