শমীক ভট্টাচার্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
দলের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে দিয়ে তদন্তের দাবি জানাল রাজ্য বিজেপি। এর পাশাপাশি ওই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও অভিযুক্তেরা এখনও কেন গ্রেফতার হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। অন্য দিকে, মঙ্গলবার দুপুরে মিরিকের বিপর্যস্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। রিজিজু, শুভেন্দুর সঙ্গে রয়েছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাও।
খগেনদের উপর হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে শমীক বলেন, “আমরা এই ঘটনার জন্য এনআইএ তদন্ত দাবি করছি। বার বার এই ঘটনা চলতে পারে না। কেউ যদি মনে করে থাকেন কোনও সাংসদকে আক্রমণ করে, রক্তাক্ত করে বিজেপিকে ভীতসন্ত্রস্ত করা যাবে, তা হলে ভুল করছেন।” অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে না-পারার জন্য রাজ্য প্রশাসনকে তোপ দেগে হুঁশিয়ারির সুরে শমীক বলেন, “যাঁরা গত কাল এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তাঁরা যদি পাতালেও থাকেন, আমাদের সরকার (কেন্দ্র) তাঁদের আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে টেনে বার করবে।”
সোমবার দুর্যোগ-বিপর্যস্ত জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন এবং শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। ইটের ঘায়ে রক্তাক্ত হন খগেন। শঙ্করকেও ধাক্কা দিয়ে চড়-ঘুষি মারার চেষ্টা হয়। আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খগেন। মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজু। মঙ্গলবার বেলায় বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছে রিজিজু এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “লোকসভার স্পিকার গত কাল (সোমবার) রাজ্য সরকারের কাছে নোটিস দিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে। রিপোর্ট দিতে দেরি করা হলে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব অনুসারে আমরা পদক্ষেপ করব।”
খগেন এবং শঙ্করের উপর হামলাকে ফের ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে দাবি করেছে বিজেপি। যে এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে, সেখানে তৃণমূল ‘রাজনৈতিক সুবিধা’ করতে না-পারার জন্যই ছক কষে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শমীক। সোমবারই গোটা ঘটনার জন্য তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছিল বিজেপি। খগেন, শঙ্করের উপর হামলার ঘটনার নিন্দা করলেও বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দেয় শাসকদল।
নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন এবং বিধায়ক শঙ্করের উপর হামলার নিন্দা করে সোমবার রাতে এক্স হ্যান্ডলে বাংলা এবং ইংরেজিতে পোস্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দুষেছিলেন রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূলকে। দু’ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের ‘জবাব’ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই এক্স পোস্টেই। মমতার অভিযোগ, উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও রাজনীতি করতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী।