স্কুলে যত উঁচু ক্লাসে উঠছে রাজ্য সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলের পড়ুয়ারা, ততই পিছিয়ে পড়ছে কেন্দ্রীয় বা ভিন্ রাজ্যের বোর্ডের পড়ুয়াদের থেকে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা রিপোর্টে এমনই কথা জানাচ্ছেন স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রির্সাচ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (এসসিইআরটি) গবেষকেরা। তাঁদের মতে, এ রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বোর্ড বা ভিন্ রাজ্যের বহু বোর্ডের পাঠ্যসূচি এবং পঠনপাঠনের বিষয়ের ফারাক রয়েছে। তার ফলেই এ রাজ্যের বোর্ডের স্কুলের পড়ুয়ারা তাদের তুলনায় অনেক কিছু দেরিতে শিখছে। পাঠ্যসূচিতে বদলের পরামর্শ দিয়ে শিক্ষা দফতরে রিপোর্টও পাঠিয়েছে এসসিইআরটি।
২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর দেশজুড়ে তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বাছাই করা পড়ুয়াদের মধ্যে একটি পরীক্ষা হয়। তাতে বিষয় ছিল সাহিত্য, বিজ্ঞান, অঙ্ক, সোশ্যাল সায়েন্স, পরিবেশবিজ্ঞান। সেই পরীক্ষার ফল বেরোনোর পরে তা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এসসিইআরটি-র গবেষকেরা এই পিছিয়ে পড়ার ঘটনা দেখেছেন। তাঁরা জানান, তৃতীয় শ্রেণিতে রাজ্য বোর্ডের পড়ুয়ারা বাকিদের সঙ্গে যতটা টক্কর দিতে পেরেছে, পঞ্চম শ্রেণিতে সেই টক্কর অনেক কমেছে। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে রাজ্যের পড়ুয়ারা অনেক বেশি পিছিয়ে পড়েছে।
এসসিইআরটি-র তরফে সুব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘তিন অঙ্কের গুণ আমাদের রাজ্যের পড়ুয়ারা চতুর্থ শ্রেণিতে শেখে, সেটা অন্যেরা শিখছে তৃতীয় শ্রেণিতেই। এই পার্থক্যটা যত উঁচু ক্লাসে উঠছে ততই বেশি হচ্ছে।’’ সুব্রতবাবুদের দাবি, রাজ্য সরকারের পাঠ্যবইয়ের পাঠ্যসূচির সঙ্গে ভিন্ রাজ্যের পাঠ্যসূচির বেশ কিছু ফারাক তাঁদের চোখে পড়েছে। পাঠ্যবইয়ের বিষয়ের মধ্যেও ফারাক ও গুণগত তফাত নজরে এসেছে। তাই রিপোর্টে পাঠ্যসূচির বদল করলে এই খামতি দূর হতে পারে।
শিক্ষকদের একাংশ বলছেন, বেশ কয়েক বছর ধরে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় বোর্ডের স্কুলে পড়ুয়া বাড়ছে। কমছে রাজ্য বোর্ডের অধীনস্থ স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা। পাঠ্যসূচির ফারাক কিছু সরকার পোষিত স্কুল আগেই বুঝেছিল।
তাই সম্প্রতি কয়েকটি পুরনো সরকার পোষিত স্কুল রাজ্য বোর্ডের অধীন থেকে কেন্দ্রীয় বোর্ডের অধীনেও চলে গিয়েছে।