Jagdeep Dhankhar

পঞ্চায়েত যেন না-হয় পুরভোট: রাজ্যপাল

রাজ্যপালের এমন ‘পরামর্শ’ নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২৯
Share:

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র

রাজ্যের শতাধিক পুরসভার ভোটের মুখে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যাপক অশান্তির প্রসঙ্গ টানলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে বৈঠকে তাঁকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যপাল।

Advertisement

পুরভোটের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে-বুঝতে কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন ধনখড়। সেই অনুযায়ী এ দিন রাজভবনে যান কমিশনার। সঙ্গে ছিলেন কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল। আলোচনা নিয়ে একটি প্রেস বিবৃতিও দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ও হিংসার যে-পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, এ বারের পুরভোটে কোনও ভাবেই যাতে তার পুনরাবৃত্তি না-হয়, সেটা সুনিশ্চিত করার জন্য সংবিধান অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে কমিশনারকে ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন রাজ্যপাল। কমিশনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত ২৪৩কে ধারার উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। ভোট সুসম্পন্ন করতে কমিশন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ ভাবে যে-কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে ওই ধারায় জানানো হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচন কমিশন কার্যত আমলাতন্ত্র-প্রধান বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে এ দিন মনে করিয়ে দেন রাজ্যপাল। সে-ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মতো প্রয়োজনে পুলিশ-প্রশাসনে রদবদলের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। বলেছেন, বিরোধীদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। ভোটের দিনক্ষণ, নিরাপত্তা নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার জন্য আগেই দাবি তুলেছে রাজ্য বিজেপি।

Advertisement

রাজ্যপালের এমন ‘পরামর্শ’ নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের দীর্ঘদিন ধরে যে-সংঘাত চলছে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পরে তা কিছুটা প্রশমিত হতে পারে বলে মনে করেন অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক। পার্থবাবু বলেন, ‘‘এটা বোঝা যাচ্ছে, সরকার চাইলেও রাজ্যপাল সংঘাতের জায়গাটি জিইয়ে রাখতে চান। তাই নির্বাচন কমিশনারকে ডেকে তিনি অহেতুক আগাম এমন কিছু কথা বললেন, যাতে মনে হয়, তাঁর গলায় বিজেপির সুর! এটা অবাঞ্ছিত। তিনি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে না-চললে রাজ্যপাল-পদের পক্ষে সেটাকে দুর্ভাগ্যজনক বলতে হবে।’’ অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের অভিমত, পুরভোটের দিন ঘোষণার আগে কমিশনের উপরে চাপ তৈরি করতেই রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ। ভোটের আগে রাজ্যপাল কী ভাবে রদবদলের কথা বলতে পারেন, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।

অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে সব দল ও প্রার্থীর সমানাধিকারের উপরে বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করেছেন রাজ্যপাল। শাসক দল যাতে বাড়তি সুবিধা না-পায়, রাজভবনের বিবৃতিতে তারও উল্লেখ রয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানালেও আশাবাদী নই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন