৩০০ কোটির সম্পত্তি খোলা পড়ে

দু’টো তারের মধ্যে গিঁট বাধার কাজটুকু শুধু বাকি ছিল। সেই কাজ এগোচ্ছিলও খুব দ্রুত। কিন্তু মঙ্গলবার ভাঙড়ে গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভ, গুলি এবং তার জেরে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে রাজ্যের দীর্ঘতম পাওয়ার গ্রিডের সাবস্টেশনটি এখনও সম্পূর্ণ অরক্ষিত পড়ে রয়েছে।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২২
Share:

দু’টো তারের মধ্যে গিঁট বাধার কাজটুকু শুধু বাকি ছিল। সেই কাজ এগোচ্ছিলও খুব দ্রুত। কিন্তু মঙ্গলবার ভাঙড়ে গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভ, গুলি এবং তার জেরে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে রাজ্যের দীর্ঘতম পাওয়ার গ্রিডের সাবস্টেশনটি এখনও সম্পূর্ণ অরক্ষিত পড়ে রয়েছে। সূত্রের খবর— জেলা প্রশাসন পাওয়ার গ্রিডের কর্তাদের মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এলাকার এই পরিস্থিতিতে ৩০০ কোটি টাকার সাবস্টেশনটির পাহারায় পুলিশ পাঠানো সম্ভব নয়। আর তাতেই মাথায় হাত গ্রিড কর্তৃপক্ষের। কারণ গত দু’দিনে এলাকার পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। রাস্তায় এখনও গাছের গুঁড়ি ও ইটের ব্যারিকেড রয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, পুলিশ গেলে ফের ভাঙড় আগুন জ্বলে উঠবে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা যখন রাজ্যের এক্তিয়ার, সেখানে প্রশাসন দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে কী বা আর করা যেতে পারে!

Advertisement

ঘটনার দিন সকালে সাবস্টেশন পাহারা দেওয়ার জন্য পাওয়ার গ্রিডের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা ছাড়া জেলা পুলিশও ছিল। কিন্তু দফায় দফায় জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পুলিশও সেখানে থাকা আর নিরাপদ মনে করেনি। যাওয়ার সময়, নিরাপত্তা কর্মীদেরও গাড়িতে তুলে নিয়ে নিরাপদ স্থানে নামিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশ সে সময়ে বলে, পরে এসে তারা সাবস্টেশনটি সিল করে দেবে। কিন্তু অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সেই কাজ আর হয়ে ওঠেনি। তার পর থেকে সাবস্টেশনটি সে ভাবেই খোলা পড়ে রয়েছে। পাওয়ার গ্রিডের কর্মীরা সেখানে যেতে পারছেন না। নিরাপত্তা কর্মীদের পাঠানোও ঝুঁকির। ফলে পুলিশ পাহারার জন্য প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরছেন গ্রিড কর্তারা।

নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন পাওয়ার গ্রিডের কর্তারা। কিন্তু কেউ ভরসা দিতে পারেনি। কথা হয়েছে জেলাশাসক, এসপি ও ডিআইজি-র সঙ্গেও। কোনও লাভ হয়নি। উল্টে জেলা পুলিশ প্রশাসনের এক কর্তা পরামর্শ দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ) আনার ব্যবস্থা করুন। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লেখার কথা এখন ভাবছেন গ্রিড কতৃর্পক্ষ।

Advertisement

পাওয়ার গ্রিডের এক কর্তার কথায়, এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা আগে পড়েননি। ফলে বুঝতে পারছেন না, কী করবেন। প্রশাসন যে অসহায়, তাঁরা বুঝছেন। ওই কর্তার স্বগতোক্তি, ‘‘কেউ যদি গেটে একটা বড় তালাও লাগিয়ে দিয়ে আসতে পারত!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন