ইস্তফা ভারতীর, গ্রহণ করছে সরকার

সূত্রের খবর, দিন দুয়েক আগে পুলিশ-প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তাকে ব্যক্তিগত ভাবে এসএমএস করে স্বেচ্ছাবসর নিতে চান বলে জানান ভারতী ঘোষ। আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা জানাতে বলা হয় তাঁকে। এর পরেই বুধবার বিকেলে ভারতীর পদত্যাগপত্র পৌঁছয় নবান্নে, ডিজি-র কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২৩
Share:

ভারতী ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

কম গুরুত্বের পদে বদলি করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বুধবার, রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠালেন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ। নবান্ন সূত্রে খবর, তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

সূত্রের খবর, দিন দুয়েক আগে পুলিশ-প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তাকে ব্যক্তিগত ভাবে এসএমএস করে স্বেচ্ছাবসর নিতে চান বলে জানান ভারতী ঘোষ। আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা জানাতে বলা হয় তাঁকে। এর পরেই বুধবার বিকেলে ভারতীর পদত্যাগপত্র পৌঁছয় নবান্নে, ডিজি-র কাছে। কেন ইস্তফা, চিঠিতে অবশ্য লেখেননি ভারতী।

ডব্লিউবিপিএস অফিসার হিসেবে ১৯৯৪-তে রাজ্য পুলিশে যোগ দেন ভারতী ঘোষ। ২০০৬ সালে তিনি আইপিএস-এর মর্যাদায় উন্নীত হন। সব মিলিয়ে ২৩ বছর চাকরি হয়েছে তাঁর। সরকারি নিয়মে, আইপিএস-রা ২০ বছর চাকরির পর ইস্তফা দিলে অবসরকালীন সুবিধার পুরোটাই পান।

Advertisement

গত সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ভারতী ঘোষকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের পদ থেকে বদলি করা হয় ব্যারাকপুরে, রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের তৃতীয় ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার পদে। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ইস্তফা। ‘খাস লোক’ ভারতীর ওপর কেন আস্থা হারাল সরকার? মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ ভারতী কি বিজেপিতে যাচ্ছেন?— বৃহস্পতিবার দিনভর উঠে এসেছে এমনই নানা জল্পনা।

মুখ্যমন্ত্রীর অতি ঘনিষ্ঠ ভারতীকে সমঝে চলতেন সিনিয়র অফিসারেরা। ভারতী যখন পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি এবং ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে, ডিআইজি, আইজি-রা তাঁর কথার উপর কিছু বলার সাহস দেখাতেন না। আবার, সরকারি মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মা’ বলে ভারতীই বকলমে হয়ে উঠেছিলেন দুই জেলার শাসক দলের মাথা।

তবে সূত্রের খবর, ভারতীকে বিজেপি বা কেন্দ্র ব্যবহার করছে— এমন ধারণা থেকেই তাঁর ডানা ছেঁটেছে রাজ্য। তিন বছরেরও বেশি পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি থাকা সত্ত্বেও সবং উপনির্বাচনের আগে তাঁকে সরায়নি নির্বাচন কমিশন। বিষয়টিকে বিজেপির চাল বলেই মনে করছে সরকারের একটি মহল। আবার, নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকেও ২৩ নভেম্বর ভারতী কী করে জেলার ৮৯ জন পুলিশ কর্মীকে বদলি করলেন, সেই প্রশ্নও ওঠে।

যাঁকে নিয়ে এত তোলপাড়, সেই ভারতী ঘোষের এ দিন কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি, জবাব দেননি এসএমএসের। যা শুনে এক পুলিশ কর্তার মন্তব্য, ‘‘উল্কার গতিতে যাঁর উত্থান, পতন তার চেয়েও দ্রুত গতিতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন