এ রাজ্যে সিলিকোসিসে মৃত পাঁচটি পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
এর আগে বহু বার অভিযোগ উঠেছে, সিলিকোসিসে আক্রান্ত ও মৃত পরিবারগুলিকে সরকারি ভাবে তেমন কোনও সাহায্য বা সহযোগিতাই করা হচ্ছে না। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সরব হন পরিবেশ কর্মী, গণ সংগঠনের কর্মী, বিজ্ঞান মঞ্চ। অবশেষে ৪ মে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাজ্য সরকারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আয়লা পরবর্তী সময়ে কাজের খোঁজে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর গোয়ালদহ, দেবীতলা, ধুতুরদহ-সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, কুলটি এলাকায় পাথর খাদানের কাজে গিয়েছিলেন।
২০১২ সালে অনেকে অসুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। শতাধিক মানুষের শরীরে বাসা বেঁধেছিল সিলিকোসিস। এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ২০ জন। সকলেই ভুগেছেন প্রবল শ্বাসকষ্টে।
একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। রাজ্য সরকারের উপরে পুরোপুরি আস্থা রাখতে না পেরে কমিশন পাশাপাশি আরও একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলে পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়কে। তিনি আক্রান্ত গ্রামগুলিতে ঘুরে ২২ ফেব্রুয়ারি সেই রিপোর্ট জমা দেন। তাতে উল্লেখ করেছিলেন, রাজ্য সরকারের শ্রম দফতর, পরিবেশ দফতর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দায়িত্ব থাকলেও তারা কেউই আক্রান্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ায়নি।
আপাতত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গোয়ালদহের মনিরুল মোল্লা, মুজাফ্ফর মোল্লা, ভীষ্ম মণ্ডল, আব্দুল পাইক ও ধুতুরদহের বিশ্বজিৎ মণ্ডলের পরিবারকে ৪ লক্ষ করে টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।
বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘এত দিন ধরে ওই গরিব পরিবারগুলির জন্য লড়াই করছিলাম, যাতে তাঁরা সরকারি সাহায্য পান। বারবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করেছি।’’
ক্ষতিপূরণ মিলবে জেনে খুশি সিলিকোসিস-আক্রান্ত ও এই রোগে মৃতের পরিবারগুলি। মৃতের এক আত্মীয় সইদুল পাইক বলেন, ‘‘টাকাটা পেলে গরিব, অসহায় পরিবারগুলির কিছুটা সুরাহা হবে।’’