প্রতীকী ছবি।
সুবৃহৎ এক মৎস্য আঁতুড়ঘর! কিন্তু মাছ ধরা বা সংরক্ষণ পরিকাঠামোর নামগন্ধ নেই। মৎস্যজীবীদের সঙ্কট দূর করে প্রত্যন্ত সুন্দরবনে সরাসরি মাছ নিলামের বাজার গড়ে তুলতে এ বার উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য।
সুন্দরবনে বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবনে (ম্যানগ্রোভ) মাছের খাদ্যভাণ্ডার যথেষ্ট। বিদেশে রফতানিযোগ্য কাঁকড়া, চিংড়ি থেকে ইলিশ, পার্সে, খলসে, ট্যাংরা, ভেটকি কিংবা ভোলা, পমফ্রেট, ম্যাকরেলের ছড়াছড়ি। ঢালাও মাছের চারা সুন্দরবন থেকে মজুত হয় অন্যত্র। কিন্তু মাছ ধরার বেলায় মৎস্যজীবীদের হিমশিম দশা।
কাকদ্বীপ তথা গোটা রাজ্যে মৎস্যজীবীদের একটি সংগঠনের কর্তা বিজন মাইতির কথায়, ‘‘কাকদ্বীপ বা ডায়মন্ড হারবারের বড় ট্রলারের মালিক মাছ কারবারিদের ও ছোট মৎস্যজীবীদের অবস্থা এক নয়!’’ এখনও নদীর পাড়ে কুমির সামলে মাছ ধরতে হয়। নৌকো ভেড়ানোর ঘাট নেই। কাদাজল ঠেলে এগোতে হয়। প্রত্যন্ত এলাকায় মাছ বিক্রির সুবিধা নেই। বরফকলের অভাবে মাছ পচে এন্তার।
পাথরপ্রতিমার মাছের জন্য বরফ আনতে রামগঙ্গা-নামখানা যেতে হয়। কুলতলির মাছের জন্য ভরসা রায়দিঘি, ডায়মন্ড হারবার। ঝড়খালি থেকে দুর্গম পথ উজিয়ে ক্যানিং যেতে যেতে মাছের দফারফা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সুন্দরবন সংক্রান্ত একটি সমন্বয় বৈঠকে এই পরিস্থিতির কথা জানতে পেরেই গরিব মৎস্যজীবীদের স্বার্থে মাঠে নেমেছে বেনফিশ। তাদের পরিকল্পনামাফিক রাষ্ট্রীয় বিকাশ যোজনার একটি প্রকল্প কাজে লাগিয়ে সুন্দরবনের জন্য মাছ ধরা থেকে বিপননের পরিকাঠামো গড়ায় সায় দিয়েছেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ।
ঠিক কী বন্দোবস্ত হচ্ছে নয়া প্রকল্পে? মৎস্য দফতরের যুগ্ম সচিব তথা বেনফিশের এমডি বিধান রায় জানিয়েছেন, প্রত্যন্ত সুন্দরবনে বাসন্তীর ঝড়খালি, পাথরপ্রতিমার জি প্লট, কুলতলির কাঁটামারি ও রায়দিঘিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। • ওই তল্লাটে পাড় বাঁধিয়ে মৎস্যজীবীদের ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার হবে। • মাছ সংরক্ষণে তৈরি হবে ২৫ টনের বরফ কল। • মাছ ধরার জাল সারাইয়ের কেন্দ্র হবে। • মাছ নিলামের বাজারও গড়ে উঠবে।