কর্মীদের হাজিরার নির্দেশ, ধর্মঘট রুখতে তৈরি প্রশাসন

ধর্মঘটের দিন যাতায়াতে কোনও ধরনের বাধা বা যানবাহন না মেলা অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩২
Share:

—ফাইল চিত্র।

আসন্ন সাধারণ ধর্মঘটের জন্য প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। ধর্মঘটে কর্মচারীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করতে প্রথামাফিক নির্দেশিকা জারি করল অর্থ দফতর। ধর্মঘটের আগের ও পরের দিন ছুটি নেওয়া যাবে না। এমনকী, ধর্মঘটের দিন যাতায়াতে কোনও ধরনের বাধা বা যানবাহন না মেলা অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে না।

Advertisement

কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি আগামী ৮ ও ৯ জানুয়ারি দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজ্যের অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ধর্মঘটের দিনগুলিতে অর্ধ বা পূর্ণ দিবস অথবা অন্য কোনও ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। কোনও কর্মী শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) ছুটিতে থাকলে তাঁকে ৭ জানুয়ারি কাজে যোগ দিতেই হবে। ধর্মঘটের আগে অর্থাৎ ৭ তারিখ এবং পরের দিন ১০ তারিখ কোনও ছুটি নেওয়া চলবে না।

নির্দেশ না মানলে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হবে। উপযুক্ত জবাব দিতে না পারলে অনুপস্থিতির দিনটিতে বেতন কাটা এবং কর্মজীবন থেকে তা ছেদ (ডায়েস নন) করা হবে। কারণ দর্শানোর নোটিসকে অগ্রাহ্য করলে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। তবে আচমকা অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, নিকটজনের মৃত্যুর মতো ঘটনা বা ৪ জানুয়ারির আগে অনুমোদিত ছুটির ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকা প্রযোজ্য হবে না।

Advertisement

অন্যান্য ধর্মঘটের মতো এ বারও সরকারি নির্দেশিকা জারির বিষয়টিকে রাজনৈতিক ভাবেই মোকাবিলা করতে চাইছে বামেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, ‘‘এই ধর্মঘট কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। তার পরেও এমন নির্দেশ জারি করে তৃণমূলের সরকার বুঝিয়ে দিল, প্রতি পদক্ষেপে তারা বিজেপিরই পাশে আছে! দেশ থেকে বিজেপি এবং রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকারকে হটানোর জন্য লড়াই আরও জোরালো হবে।’’

ধর্মঘটে রাস্তায় বেসরকারি বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এ দিন কসবার পরিবহণ ভবনে বেসরকারি বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি এবং অটোচালকদের সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন দফতরের কর্তারা। রাস্তায় পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি বাস ভাঙচুরের ক্ষেত্রে বিমার ব্যবস্থা থাকবে বলে বাস মালিকদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মালিকেরা জানান, বাসকর্মীরা রাস্তায় বাস নিয়ে বেরোলে তাঁদের আপত্তি নেই। সিটু এবং এআইটিইউসি প্রভাবিত ট্যাক্সি সংগঠন ধর্মঘট সমর্থন করলেও বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েযন এবং প্রোগ্রেসিভ মেনস ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে না। আইএনটিটিইউসি'র অটো সংগঠনের নেতা জানান, ধর্মঘটে অটো সচল থাকবে। রাজ্য পরিবহণ নিগম প্রায় ৫০০ অতিরিক্ত বাস নামাবে।

লালবাজারে এ দিনই ডিভিশনাল ডেপুটি কমিশনারদের নিয়ে বৈঠক করেছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। পুলিশ সূত্রের খবর, ধর্মঘটের দু’দিন শহরের স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে নজরদারি চালাতে ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধর্মঘটের আগের রাত থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকবে। বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন-সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশ পিকেট থাকবে ধর্মঘটে। বড় রাস্তায় সংযোগস্থলে থাকবে অতিরিক্ত বাহিনী। যাতে ধর্মঘটীরা যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে। মেট্রো স্টেশন, ফেরি ঘাটেও থাকবে অতিরিক্ত পুলিশের নজরদারি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন