গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
চেন্নাই, দিল্লিতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত ফাইলটি নাকি খুঁজে পাচ্ছে না অর্থ দফতর! বৃহস্পতিবার রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল বা স্যাট-এ মামলা চলাকালীন এ কথা জানান রাজ্য সরকারের আইনজীবী। রাজ্যের বক্তব্য, ১৯৮০ সালের সেই ফাইল আর পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু ফাইল হারাল কী ভাবে? এই প্রশ্নের মুখে নবান্নে অর্থকর্তাদের মুখে কুলুপ।
দীর্ঘদিন অর্থ দফতরে কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত বিষয় দেখছেন এমন এক অফিসারের কথায়, ‘‘এত পুরনো ফাইল। মনে হচ্ছে, ‘গ্যাঞ্জেস ডিসপোজাল’ হয়ে গিয়েছে। সচিবালয়ে পুরনো অদরকারি ফাইল ফেলে দেওয়ার পোশাকি নাম ‘গ্যাঞ্জেস ডিসপোজাল’। মানে গঙ্গাপ্রাপ্তি! ২৮ বছরের পুরনো ফাইলেরও গঙ্গাপ্রাপ্তি হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন অর্থকর্তাদের একাংশ। তাঁদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, ই-ফাইল ব্যবস্থা হালে চালু হয়েছে। অতীতে পাঁচ-সাত বছরের পুরনো ফাইল ফেলে দেওয়ায় রীতি ছিল। তার উপরে মহাকরণ থেকে নবান্নে অফিস উঠে যাওয়ার সময় কী হয়েছে, তা বলা শক্ত বলে জানাচ্ছেন অর্থকর্তাদের একাংশ।
শুধু অদরকারি ফাইল নয়, বহু গুরুত্বপূর্ণ ফাইলও ‘হারিয়ে দিতে’ সরকারি কর্মীরা সিদ্ধহস্ত বলে জানান সচিবালয়ের অফিসারেরা। এক কর্তা বলেন, ‘‘২১ জুলাইয়ের গুলিচালনা সংক্রান্ত ফাইলও তো পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার এই নিয়ে কমিশন গঠন করলেও তার হদিস মেলেনি। শুধু তার একাংশ নতুন করে তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল।’’
অর্থ দফতর নতুন করে ডিএ ফাইল তৈরির চেষ্টা করছে না কেন? মামলাকারীদের বক্তব্য, নবান্নে ১৯৮০ সালের ফাইল থাকতে না-ও পারে। কিন্তু চেন্নাই বা দিল্লি অফিসে তো সেই আদেশনামার ‘অফিস কপি’ থাকার কথা। তা জোগাড় করে স্যাটের সামনে পেশ করা হল না কেন? মামলাকারীদের প্রশ্ন, এ বছরেও কেন্দ্রীয় সরকার ডিএ ঘোষণার পরে দিল্লি ও চেন্নাইয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য ২৮ বছরের পুরনো আদেশনামা মেনেই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার সেই ফাইলও তো স্যাটে পেশ করতে পারত। কেন করল না?
অর্থকর্তারা কিছু বলতে চাইছেন না। এক কর্তা বলেন, ‘‘মূল ফাইলটি খোঁজা হচ্ছে। আশা করি, পরবর্তী শুনানিতে কিছু জবাব দেওয়া হবে।’’