দ্বিতীয় বার বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফেরার পর এ বার রাজনৈতিক স্থায়িত্বকে পুঁজি করেই লগ্নি টানতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২০-২১ জানুয়ারি কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলন। পাঁচ মাস আগে থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের ঠিক আগে রাজ্যের অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র আজ দিল্লিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মতো সার্ক-গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে নিয়ে মোট ২২টি দেশের প্রতিনিধি হাজির ছিলেন। বৈঠক শেষে অমিতবাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে ভাবে বিপুল ভোটে জিতে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেছেন, তা দেখে বিদেশের কূটনীতিকরা বুঝতে পারছেন, আগামী পাঁচ বছর রাজ্যে রাজনৈতিক স্থায়িত্ব থাকবে।’’
গত জানুয়ারিতে কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে ২৬টি দেশ হাজির ছিল। এ বার আরও বেশি সংখ্যক দেশকে হাজির করতে চাইছে রাজ্য সরকার। মমতা আগামী সেপ্টেম্বরে ইতালি ও জার্মানিতে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় দফায় সেটাই হবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর। এ দিনের বৈঠকে জার্মানির তরফে অমিতবাবুকে আশ্বাস দেওয়া হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সফরে জার্মানিতে প্রথম সারির শিল্পপতিদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন। জার্মানির দু’টি বণিকসভা মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
অমিতবাবু জানান, সিঙ্গাপুর ও কোরিয়া পশ্চিমবঙ্গের বন্দরে লগ্নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে এ দিন। বিদ্যুৎ শিল্পেও কোরিয়ার আগ্রহ রয়েছে। কোরিয়ার ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সি (কোটরা) কলকাতায় তাঁদের দফতর খোলার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পণ্য করিডরের পাশে রাজ্যে যে সব শিল্প পার্ক গড়ে উঠবে, সেগুলি নিয়েও কোরিয়া, জার্মানির মতো দেশগুলি উৎসাহ দেখিয়েছে। অমিতবাবুর দাবি, পশ্চিমবঙ্গ এখন দেশে রাজ্যগুলির মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। রাজ্য সরকার শিল্পের ক্ষেত্রে যে সব সুযোগ-সুবিধা, ছাড়ের ঘোষণা করেছে, তাতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা মুগ্ধ। সরকারের নেতৃত্বের উপরেও যে তাঁদের আস্থা রয়েছে, তারও বহিঃপ্রকাশ দেখা গিয়েছে এ দিনের বৈঠকে। পাঁচ মাস আগে থেকেই সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য, এতেও তাঁরা বুঝতে পারছেন, শিল্পায়ন ও লগ্নির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ কতখানি দায়বদ্ধ।
এ দিনের বৈঠকে শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া, শিল্প দফতর ও শিল্পোন্নয়ন নিগমের কর্তারা হাজির ছিলেন। বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলন আয়োজনে বণিকসভা ফিকি রাজ্য সরকারকে সাহায্য করবে। বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পর ফিকি-র কর্তাদের সঙ্গেও সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের আমলারা।