মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানায় গোমাংস বিক্রি এবং খাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। তার প্রতিবাদে আগামী মঙ্গলবার কলকাতার মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে পছন্দ মতো বিভিন্ন ধরনের মাংস খাওয়ার একটি উৎসবের আয়োজন করেছিল কলকাতার দু’টি সংগঠন। অভিযোগ, নিয়ম মেনে বুকিংয়ের পরে সেই অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করে দিয়েছেন হল-কর্তৃপক্ষ। আর তা নিয়েই শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর।
রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী ও সুভাষ চক্রবর্তী ফাউন্ডেশন ‘স্বাধীন দেশ, স্বাধীন রুচি, স্বাধীন খাদ্যাভ্যাস’ নামে এই অনুষ্ঠানটির আয়োজক। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ফৈয়াজ আহমেদ খান জানান, ধর্মীয় উস্কানি ও সংকীর্ণ রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কোনও সরকার কারও খাদ্যাভ্যাস ঠিক করে দিতে পারে নাএটাই ছিল আমাদের প্রতিবাদের উদ্দেশ্য। তাই টাকা দিয়ে এই হল ভাড়া করা হয়েছিল। রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের খাদ্যাভ্যাসে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায় না। বহু গরিব মানুষের খাবারে গোমাংস হল প্রোটিনের একমাত্র উৎস। এই মাংস বিক্রি ও খাওয়া জোর করে বন্ধ করলে বহু মানুষ কর্মহীনও হবেন। তাঁরা সকলেই গরিব মানুষ। এর বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদের জন্য এই উৎসব করতে উদ্যোগী হয়েছিলাম।”
কিন্তু টাকা দিয়ে ভাড়া করার পরেও কেন বাতিল করা হল এই অনুষ্ঠান?
এ ব্যাপারে মুসলিম ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক শেখ সামসের আলম জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বিবরণ এবং সংগঠন সম্পর্কে আয়োজকরা সব তথ্য জমা করেননি। তাই নিয়ম অনুযায়ী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠানের জন্য ওই প্রেক্ষাগৃহটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। তাঁর বক্তব্য, গত শনিবার লিখিত ভাবে তিনি এই কথা জানিয়ে ভাড়ার টাকা ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য আয়োজকদের খবর দিয়েছেন।
যদিও আয়োজকরা সে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান অনুষ্ঠানের যাবতীয় পরিকল্পনার কথা কর্তৃপক্ষকে আগেই বলা হয়েছে। অনুষ্ঠান সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যও তাঁদের দেওয়া হয়েছে। তার পরেও এই অনুষ্ঠান কেন বাতিল করা হল সে প্রশ্ন তুলেছেন আয়োজকরা। ওই ঘটনা নিয়ে রীতিমতো রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
মুসলিম ইনস্টিটিউটের আজীবন সদস্য পদে থাকা তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ পাল্টা অভিযোগ করেন, “আয়োজকদের সম্ভবত কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। না হলে এই ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য এই ইনস্টিটিউট-ই ব্যবহার করতে চাইবেন কেন?”
কান্তিবাবুর ব্যাখ্যা, “আমাদের কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না। খাদ্যাভ্যাসের ব্যাঘাতের জন্য পাশে থাকতে চেয়েছিলাম। পারিপার্শ্বিক চাপেই কর্তৃপক্ষ যে অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন, তা সাংসদের কথায় স্পষ্ট।”