ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড নিয়ে কথা শুরু

দেড় বছর আগে পাওয়ার গ্রিড আন্দোলন শুরুর পরে এমন বৈঠক এই প্রথম। এ দিন কোনও সিদ্ধান্ত না-হলেও দু’পক্ষই মানছেন, আলোচনা ইতিবাচক। তবে আরও আলোচনার প্রয়োজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাঙড় শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

ফাইল চিত্র।

অবশেষে ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পে জট কাটানোর প্রক্রিয়া শুরু হল। থমকে থাকা ওই প্রকল্প নিয়ে শনিবার জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন সেখানকার জমি রক্ষা কমিটির সদস্যেরা। দেড় বছর আগে পাওয়ার গ্রিড আন্দোলন শুরুর পরে এমন বৈঠক এই প্রথম। এ দিন কোনও সিদ্ধান্ত না-হলেও দু’পক্ষই মানছেন, আলোচনা ইতিবাচক। তবে আরও আলোচনার প্রয়োজন।

Advertisement

এ দিন আলিপুরে জেলাশাসকের দফতরে বেলা ১২টা থেকে দু’ঘণ্টা ওই বৈঠক হয়। তাতে প্রশাসনের পক্ষে জেলাশাসক ছাড়াও বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিংহ,
বিদ্যুৎ-কর্তারা ছিলেন। পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষও ছিলেন। জমি রক্ষা কমিটির পক্ষে ছিলেন মির্জা হাসান, সাজারুল ইসলাম, অলি মহম্মদ, মোশারেফ মল্লিক ও এ বার পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতে জয়ী চার নির্দল প্রার্থী।

প্রশাসন সূত্রের খবর, পাওয়ার গ্রিড নিয়ে এলাকার মানুষের ভুল ধারণা কাটাতে সরকারি ভাবে সঠিক তথ্য তুলে ধরা, রাস্তাঘাট নির্মাণ, কিসান মান্ডি তৈরি, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া— এ সব নিয়ে আলোচনা হয়। জমি-আন্দোলনে ধৃত নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তী-সহ বাকিদেরও মুক্তির আবেদন জানান আন্দোলনকারীরা। পরবর্তী আলোচনায় অলীক এবং নকশাল নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরীকেও ডাকার অনুরোধ জানান তাঁরা।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পের জট কাটানো, এলাকা উন্নয়ন সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে জমি রক্ষা কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা অনেকটাই ইতিবাচক। বলা যেতে পারে, যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাতে জট কাটতে পারে।’’ মির্জা হাসান জানান, জেলাশাসক চিঠি দিয়ে আলোচনায় ডেকেছিলেন। কমিটির তরফে তাঁরা ৮ জন আলোচনায় ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘পাওয়ার গ্রিড-সহ নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। আরও আলোচনা দরকার। আমাদের নেতৃত্বকেও পরবর্তী আলোচনায় ডাকার অনুরোধ জানিয়েছি।’’

পাওয়ার গ্রিডের বিরোধিতায় ২০১৭-র ১৭ জানুয়ারি ভাঙড় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। তখন রটেছিল, প্রকল্পটি হলে মহিলাদের সন্তান হবে না, এলাকায় মাছ চাষ হবে না, ফসল মার খাবে। আন্দোলনকারীরা ‘জমি-জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি’ গড়েন। সেই আন্দোলনের পর থেকেই প্রকল্পের কাজ বন্ধ। প্রশাসন একাধিকবার বৈঠকের চেষ্টা করলেও তা হয়নি। প্রকল্পটি হলে বিহারের পুর্ণিয়া ও ফরাক্কা থেকে রাজ্যের গ্রিডে অতিরিক্ত ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা যাবে ও ভাঙড়-সহ দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার বিদ্যুৎ পরিষেবার মানও বাড়বে বলে প্রশাসনের কর্তাদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন