বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও জয়প্রকাশ মজুমদারের সঙ্গে রথযাত্রা নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজ্যের আপত্তি রয়েছে বলে সোমবার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল।
রথযাত্রা নিয়ে আলোচনার জন্য বিজেপির প্রতিনিধি দলের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে সোমবার আদালতে আপত্তি জানালো রাজ্য সরকার। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য, ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তাই সরকারি কর্তারা তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নন। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আজ, মঙ্গলবার এ নিয়ে রাজ্যের আবেদন শুনতে পারে। অন্য দিকে, বিজেপিকেও ডিভিশন বেঞ্চের পরামর্শ, বিকল্প কোনও নাম থাকলে তারা তা জানাতে পারে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য পরে প্রতিনিধি দলের সদস্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘নাম পরিবর্তনের প্রশ্নই উঠছে না। তাছাড়া প্রশাসনের কর্তাদের অনেকের বিরুদ্ধেও তো মামলা ঝুলছে। তার কী হবে?’’ অনেকের মতে, রাজ্য সরকার বিজেপির প্রতিনিধি দলে পরিবর্তনের জন্য জোরাজুরি করলে দল সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মোকাবিলার পথ খোলা রাখতে চায়।
রথযাত্রা নিয়ে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপির ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও জয়প্রকাশ মজুমদারের সঙ্গে রথযাত্রা নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজ্যের আপত্তি রয়েছে বলে সোমবার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। তিনি জানান, ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলেই রাজ্যের আপত্তি। তা শুনে বিচারপতি সমাদ্দার এজির উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘‘দেশের অনেক নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি বা আইজি-র বিরুদ্ধে কি আদালত অবমাননার মামলা নেই?’’ ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন এজিকে জানিয়েছে, রাজ্য কি চাইছে তা জানিয়ে নতুন আবেদন করতে হবে। সেই আবেদন আজ, মঙ্গলবার শোনা হতে পারে। তবে ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন বিজেপির আইনজীবী সপ্তাংশু বসুকেও জানিয়ে দিয়েছে, বিকল্প কোনও নাম থাকলে তা জানাতে।
ডিভিশন বেঞ্চ আগেই নির্দেশ দিয়েছে, আলোচনার ভিত্তিতে রথযাত্রা নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত ১৪ ডিসেম্বর বিজেপিকে জানাতে হবে।
আইনজীবীদের একাংশের ব্যাখ্যা, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর করার মেয়াদ এখনও ফুরোয়নি। কারণ আগামিকাল ১২ ডিসেম্বর। ১৪ ডিসেম্বরও পেরিয়ে যায়নি।
অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, ডিভিশন বেঞ্চে নতুন আবেদনের কি ফয়সালা হয়, তা দেখে নিয়ে তবেই রথযাত্রা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য।
এ দিকে, রাজ্য বিজেপির এক প্রতিনিধি দল এ দিন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে গিয়ে অভিযোগ করে, রাজ্যে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সবসময়েই বাধা দেওয়া হচ্ছে।