আদালতে তাঁর আচরণ যথাযথ না হওয়ায় বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বিজেপি নেতাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ১৬ এপ্রিলের মধ্যে জরিমানার টাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে।
বিচারপতি তালুকদারের এজলাসে তৃণমূলের সহ-সভাপতি এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন অভিযোগ করেন, হাইকোর্টে মামলা করার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টেও একই দাবিতে মামলা করে দ্বিচারিতা করেছে বিজেপি। আরও অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের কাছে হাইকোর্টের মামলার কথা গোপন করে বিজেপির মামলাকারী এক দিকে শীর্ষ আদালতকে বিপথে চালিত করেছেন, অন্য দিকে হাইকোর্টকেও অন্ধকারে রেখেছেন। আইন অনুযায়ী তা করা যায় না।
অবাধ নির্বাচনের দাবিতে হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের আদালতে ৯ এপ্রিল মামলা করেছেন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারও একই দিনে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মামলা করার আবেদন জানান। হাইকোর্টের তালিকায় মামলাটি ওঠে ১০ এপ্রিল। মঙ্গলবার বিচারপতি তালুকদারের চেম্বারে সেই মামলার শুনানি হয়।
সূত্রের খবর, সেখানে হাজির ছিলেন প্রতাপবাবু। বিচারপতি নির্দেশ দেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মেয়াদ সংক্রান্ত রাজ্য নিবার্চন কমিশনের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ থাকছে। শুনানি শেষ হওয়ার পরে হাইকোর্ট চত্বর ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় কল্যাণবাবু দিল্লি থেকে খবর পান, সুপ্রিম কোর্টেও একই দাবিতে মামলা করেছে বিজেপি। সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি তালুকদারের আদালতে ফিরে গিয়ে এ নিয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কল্যাণবাবু। বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী তিনি সাংবাদিক সম্মেলনরত প্রতাপবাবুকে জানিয়ে দেন, বিচারপতি তাঁকে ১১ এপ্রিল সকাল সাড়ে দশটায় তাঁর আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। কল্যাণবাবু এ দিন বলেন, ‘‘বুধবার বিচারপতির নির্দেশ মতো বিজেপি-র ওই নেতা বিচারপতি তালুকদারের আদালতে হাজির ছিলেন না।’’
তবে এ দিন বিচারপতি তালুকদারের আদালতে হাজির ছিলেন প্রতাপবাবু। কল্যাণবাবুর সওয়াল শেষ হলে তিনি তাঁর বক্তব্য জানাতে ওঠেন। তা দেখে বিচারপতি তাঁর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আদালতের বাইরে যে আচরণ করেছেন, আদালতের ভিতরে তা করতে পারেন না। আপনার আচরণের জন্য আপনাকে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হল।’’