প্রতীকী ছবি।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলেন সিআইডি-র এক অফিসার। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর বা এএসআই। তাঁর নাম বিজয় ভট্টাচার্য। ৫৪ বছর বয়স্ক ওই গোয়েন্দার মস্তিষ্ক গুরুতর জখম হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটে রাজ্য পুলিশের সদর, আলিপুরের ভবানী ভবনে। সঙ্গে সঙ্গেই রক্তাক্ত গোয়েন্দাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, বিজয়বাবুর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে স্নায়ুশল্য চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষের তত্ত্বাবধানে ওই গোয়েন্দা অফিসারের চিকিৎসা চলছে। এ দিন তাঁর সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। বিজয়বাবুর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রশ্ন উঠছে, আত্মহননের উদ্দেশ্য থাকলে সারা রাত কাজ করে সকালে কর্মস্থলকেই বা কেন বেছে নিলেন ওই গোয়েন্দা অফিসার? কারণ হিসেবে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে তীব্র মানসিক অবসাদের কথাই উঠে আসছে। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ভবানী ভবনের মালখানায় পাহারার দায়িত্বে ছিলেন বিজয়বাবু। চারতলায় মালখানার আশপাশের সব শৌচালয় বন্ধ ছিল। এ দিন সকালে নিজের জায়গা ছেড়ে প্রায় ৫০ মিটার দূরের একটি শৌচালয়ে গিয়েছিলেন বিজয়বাবু। তখন হাতে গোনা কয়েক জন পুলিশকর্মী দফতরে ছিলেন। হঠাৎই শৌচালয়ের দিক থেকে খট করে একটা আওয়াজ আসায় এক অফিসার ছুটে যান। গিয়ে দেখেন, বিজয়বাবু পড়ে আছেন শৌচালয়ের সামনে। চার দিকে রক্ত।
প্রশ্ন করা হলে বিজয়বাবু জানান, তিনি পড়ে গিয়েছেন। গুলি চালানোর কথা তিনি বলেননি। তাঁর ডান কানের তলা থেকে রক্ত পড়ছিল। সঙ্গে সঙ্গেই সহকর্মীরা তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, গুলিতে জখম হয়েছেন তিনি। তবে গুলি দেহে ঢোকেনি, ডান কানের তলা দিয়ে ঢুকে কানের উপর দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। পরে ভবানী ভবনের চারতলার শৌচালয়ের কাছ থেকে বিজয়বাবুর রিভলভারটি পাওয়া যায়। কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড এবং ফরেন্সিক বিভাগের অফিসারেরা ওই শৌচালয় পরীক্ষা করেন। আত্মহত্যার চেষ্টার মামলা দায়ের করে তদন্ত চলছে বলে আলিপুর থানা সূত্রের খবর।
পুলিশ জানায়, দত্তপুকুরের বাসিন্দা বিজয়বাবু ছিলেন সিআইডি-র বারাসত শাখায়। সদর দফতরে রাতের ডিউটির জন্য তিনি সোমবার রাত ৮টা নাগাদ ভবানী ভবনে পৌঁছন। রাতের ডিউটি শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার সকাল ৮টায়।
কিন্তু অবসাদ কেন?
সিআইডি-কর্তাদের কথায়, সম্প্রতি ক্যানসারে বিজয়বাবুর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মৃত্যু হয়। তাঁর স্ত্রীও অসুস্থ। সব মিলিয়েই তিনি অবসাদে ভুগছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।