উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ। শনিবার সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে
সামনে মাছভর্তি ট্রে, থার্মোকলের বাক্স। তা সরাতেই পিছন থেকে বেরিয়ে এল থরে থরে সাজানো কচ্ছপভর্তি ট্রে! শুক্রবার গভীর রাতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ধূলাগড় টোলপ্লাজায় এ ভাবেই ভেস্তে দেওয়া হল বন্যপ্রাণী পাচারের ছক। শুক্রবার রাতে বিরাটির কাছ থেকেও ১০০টি কচ্ছপ-সহ দু’জনকে পাকড়াও করেছে ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো (ডব্লিউসিসিবি), সিআইডি ও বন দফতরের যৌথ দল।
কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ ডব্লিউসিসিবি-র কর্তারা জানাচ্ছেন, মোট ১৭৯৯টি ‘ইন্ডিয়ান সফট শেল টার্টল’ প্রজাতির কচ্ছপ মিলেছে। নিতাই দাস, দেবাশিস দাস, দীপঙ্কর মণ্ডল ও উত্তম সিংহ নামে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্প্রতি এ রাজ্যে একসঙ্গে এত কচ্ছপ উদ্ধার হয়নি। অন্ধ্র-ওড়িশা সীমানা থেকে আনা কচ্ছপগুলিকে বনগাঁয় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। বেশ কিছু কচ্ছপ মৃত অবস্থায় মিলেছে বলেও সিআইডির দাবি।
ডব্লিউসিসিবি সূত্রের খবর, সম্প্রতি ওড়িশা থেকে পশ্চিমবঙ্গে কচ্ছপ পাচারের দু’টি আলাদা খবর মিলেছিল। সেই মতো সিআইডি ও বন দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে দু’টি আলাদা দল গঠন করে বিরাটির কাছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ও ধূলাগড়ে মোতায়েন করা হয়। বিরাটি থেকে নিতাই দাস ও উত্তম সিংহকে পাক়়ড়াও করা হয়। চেদা থেকে আসা বাসে তাদের কাছে কচ্ছপ পৌঁছেছিল। ধূলাগড়ে একটি সন্দেহভাজন ম্যাটাডর আটক করা হয়। গ্রেফতার করা হয় চালক দেবাশিস দাস ও খালাসি দীপঙ্কর মণ্ডলকে। কটক থেকে তাদের
ম্যাটাডরে কচ্ছপ তোলা হয়। সিআইডির তদন্তকারীরা বলছেন, এরা নেহাতই চুনোপুঁটি। এদের পিছনে রয়েছে বড় মাথা।
বন দফতরের খবর, ‘ইন্ডিয়ান সফট শেল টার্টল’ প্রজাতির কচ্ছপ গঙ্গা, মহানদীর মতো নদীতে পাওয়া যায়। মূলত মাংসের লোভেই এদের ধরে বাজারে বিক্রি করা হয়। বনগাঁর বিভিন্ন বাজারে কচ্ছপের মাংস বিক্রির চল রয়েছে। যদিও বেশির ভাগ সময় ধরপাকড় করা হয় না। বাংলাদেশেও কচ্ছপ পাচারের পরিকল্পনা ছিল কি? ডব্লিউসিসিবি সূত্রের বক্তব্য, এর আগে কচ্ছপের মাংস ও হা়ড় বাংলাদেশে পাচারের সময় ধরা পড়েছে। ফলে এ ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।