সদ্যোজাত: শাবকের সঙ্গে মা। বেঙ্গল সাফারি পার্কে। নিজস্ব চিত্র
জৈষ্ঠ্যে নতুন অতিথি এল উত্তরবঙ্গ বেঙ্গল সাফারি পার্কে। পূর্ণ বয়স্ক বাঘিনি শীলা, জন্ম দিল তিনটি শাবকের। তবে, তিনটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শাবকের মধ্যে একটি সাদা বা অ্যালবিনো ।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শাবক বা মায়ের ধারে কাছে কাউকে আপাতত যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি এবং পাঁচ জন বনকর্মীকে দিয়ে পাহারার কাজ চলছে। অন্তত দু’সপ্তাহ পর চোখ ফুটলে ধীরে ধীরে শাবকগুলি স্বাভাবিক হাঁটাচলা শুরু করবে।
বন দফতর সূত্রের খবর, স্বাভাবিক জঙ্গলের ঘেরাটোপে উত্তরবঙ্গে এই প্রথমবার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের জন্ম হল। আপাতত তিনটি শাবকই সুস্থ। তবে মা শীলাকে সুস্থ রাখাই এখন বন দফতর এবং বেঙ্গল সাফারি পার্কের অফিসারদের কাছে চ্যালেঞ্জ। কারণ তিনটি শাবকের জন্মের পর শীলা খাওয়া ছেড়ে দেয়। তাতে চিন্তায় পড়ে যান অফিসারেরা। শাবকদের দুধ খাওয়ানো শুরু করলেও, সে নিজে কিছুই খাচ্ছিল না। ধীরে ধীরে প্রথমে নুন, চিনির জল খায়। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর গত শুক্রবার প্রথমবার সওয়া কেজি মোষের মাংস খেয়েছে শীলা। রোজকার নির্ধারিত ৮ কেজি কাঁচা মাংস, আনাজ ও মাংসের স্যুপ না খাওয়া পর্যন্ত তার শরীর ঠিক হবে না বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। আশার কথা, শনিবার সন্তানদের মুখে তুলে ঘেরাটোপের মধ্যে ঘুরেছে শীলা। বন কর্তারা মনে করছেন, দিনে-দিনে শীলা খাওয়ার পরিমাণ বাড়ালেই এই দুশ্চিন্তা কেটে যাবে।
বন কর্তারা জানান, প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে বাঘেদের সব শাবক সাধারণত বাঁচে না। মাস খানেক পর্যন্ত তাই মা-শিশুকে নিভৃতে রাখাটাই নিয়ম। মানুষের গন্ধ বা গতিবিধি সেখানে থাকলে সমস্যা বাড়ে। শাবকদের আলাদা করে ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতাও বাঘেদের মধ্যে রয়েছে। মাস দেড়েক আগে দার্জিলিং চিড়িখানায় চারটি তুষার চিতার জন্ম হয়। কিন্তু দু’সপ্তাহের মধ্যে দু’টি শাবকের মৃত্যু হয়। আপাতত দু’টি তুষার চিতা শাবক ভাল রয়েছে। সে কথা মনে রেখে, মা ও শিশুদের সুস্থ রাখতে তাই নজর রেখে চলেছেন সাফারি পার্কের অফিসারেরা।
বেঙ্গল সাফারি পার্কের ডিরেক্টর অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মা ও শাবকদের যাতে কেউ বিরক্ত না করে সেই দিকে নজর রাখা হচ্ছে। দু’জন চিকিৎসক সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ওদের শরীরের উপর নজর রাখছে। মা-সহ সব শাবকদের ঠিকঠাক রাখা এখন আমাদের লক্ষ্য।’’