প্রতীকী ছবি।
শিক্ষক থেকে শ্রেণিকক্ষ— স্কুল স্তরে পরিকাঠামোর অভাব প্রায় সব ক্ষেত্রেই। এমনকী রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত অধিকাংশ স্কুলেই প্রধান শিক্ষকদের বসার কোনও ঘর নেই! এমনই তথ্য উঠে এসেছে সর্বশিক্ষা মিশনের সাম্প্রতিক (২০১৬-’১৭) রিপোর্টে।
রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, পড়ুয়াদের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। কোনও শ্রেণিতে ৩৫ জনের বসার কথা, কিন্তু বসতে হয় ১০১ বা ১০৯ জন পড়ুয়াকে। সর্বশিক্ষার একই রিপোর্ট জানাচ্ছে, প্রধান শিক্ষকদের বসার জায়গাও বাড়ন্ত। রাজ্যে সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের সংখ্যা মোট ৮৩ হাজার ৩২২। তার মধ্যে মাত্র ১৯ হাজার ৯২টি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের জন্য ঘর বরাদ্দ রয়েছে।
প্রাথমিক স্তরে প্রধান শিক্ষকের ঘর রয়েছে ১৭.১১% স্কুলে। উচ্চ প্রাথমিকে সেই হার ১৮.৯৫%, মাধ্যমিকে ৬১.৬৫%, উচ্চ মাধ্যমিকে ৬৯.৪৪%। প্রাথমিক স্কুলে পরিস্থিতি সব থেকে খারাপ। পশ্চিম মেদিনীপুরের মাত্র ৫.৬৬%, পূর্ব মেদিনীপুরের ৫.৮৩% এবং পুরুলিয়ার ৭.৮৯% প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষকের ঘর রয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বুধবার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ঢাক পিটিয়ে অনেক উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু স্কুলগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন যে হচ্ছে না, এই রিপোর্টই তার প্রমাণ।’’ ‘হেডমাস্টার্স কনসিলিয়াম’-এর নেতা, পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম চক্রবর্তীর বক্তব্য, স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের রোজকার পঠনপাঠনের বাইরেও অনেক দায়িত্ব থাকে। অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করতে হয়। বাইরের অনেকে নানা প্রয়োজনে দেখা করতে আসেন। বৈঠক করার ঘর না-থাকলে খুবই অসুবিধা হয়। সরকারের এটা দেখা উচিত। এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের পর্যবেক্ষণ, পড়ুয়াদের বসার জায়গা নেই। প্রধান শিক্ষকও বসার ঘর পাচ্ছেন না। শিক্ষকের অভাব। ‘‘এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকেরা কি ছেলেমেয়েদের এই সব স্কুলে পাঠাতে চাইবেন? ফলে যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে। এই সব স্কুলের প্রতি অভিভাবকেরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন,’’ বলেন কৃষ্ণপ্রসন্নবাবু।