কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।
রামনবমী উপলক্ষে আসানসোল ও রানিগঞ্জে অশান্তির জন্য মূলত পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করে কেন্দ্রের কাছে দু’টি রিপোর্ট পাঠালেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সূত্রের খবর, রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুলিশ সময়মতো অশান্তি থামাতে সক্রিয় না হওয়ায় পরিস্থিতির অবনতি হয়। তারা প্রথম থেকেই কড়া হলে সংঘর্ষ এত ব্যাপক আকার নিত না।
গত শনিবার আসানসোল-রানিগঞ্জের সংঘর্ষ কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময়েই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেশরীর রিপোর্টে সেই ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রথামাফিক প্রতি মাসে একটি করে রিপোর্ট পাঠান রাজ্যপাল। কিন্তু এ বারের রিপোর্ট রুটিন নয়। কেশরী একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন তিনি আসানসোলে যাওয়ার আগে সেখানকার অবস্থা সম্পর্কে। অন্য রিপোর্টটি সরেজমিন যা দেখেছেন, সে সম্পর্কে। দু’টি রিপোর্টই রাষ্ট্রপতির হাত ঘুরে মন্ত্রকের কাছে এসেছে।
সূত্রের খবর, রিপোর্টে সংঘর্ষের জন্য রাজনৈতিক মেরুকরণকেই দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পরে তা থামাতে পুলিশের যে ভাবে পদক্ষেপ করা উচিত ছিল তা করা হয়নি বলেই জানানো হয়েছে রিপোর্ট।
আরও পড়ুন: রামনবমীর পুলিশের দোষ দেখছে নবান্নও
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দূরদর্শিতা এবং নেতৃত্বের অভাবের পাশাপাশি সংঘর্ষ যে এত ব্যাপক আকার নেবে তা বুঝতে না পারায় অবস্থা ঘোরালো হয়ে ওঠে। তা ছাড়া, পুলিশ যদি গোড়া থেকে নিষ্ক্রিয় না থেকে এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার কাজে নামত, তা হলে এত বড় এলাকা জুড়ে অশান্তি ছড়াত না। একই সঙ্গে রিপোর্টে সম্প্রতি রাজ্যে কী ভাবে একের পর এক গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যে ক্রমশ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের আবহ তৈরি হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, হাওড়ার ধুলাগড়ের সংঘর্ষের কথা।
কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের কথা না বললেও, ভোট ব্যাঙ্কের কথা ভেবে সংঘর্ষকারীদের সম্পর্কে নরম মনোভাব নেওয়ার সমালোচনা করা হয়েছে রিপোর্টে।
রাজ্যপালের আসানসোল সফর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করে তৃণমূলের একাংশ। যদিও সে কথা মানতে চাননি বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল মানেই বিজেপির লোক হবেন এমন নয়। উপদ্রুত এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে রাজ্যপাল যদি উদ্যোগী হন, তবে তা প্রশংসনীয়।’’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও বলেছে, একাধিক মাসিক রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বহু পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন রাজ্যপাল। বিশেষ করে মমতার জেলা সফর এবং প্রশাসনকে জেলাতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের।