প্রতীকী ছবি।
রোগী ভর্তির ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও ‘ছুটির দিন’ হওয়ায় রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাননি চিকিৎসক। রিপোর্ট দেরিতে পাওয়ার জেরে সমস্যা বেড়েছে। রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতির পাশাপাশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
ডেঙ্গির মরসুমে সরকারি হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্ত পরীক্ষার গড়িমসির এটাই চেনা ছবি। এ বার সেই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য সরকারি হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তার পর তাঁরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গির মরসুমে রবিবার ‘ছুটির দিন’ হিসাবে গ্রাহ্য হবে না। প্রয়োজনে হাসপাতালের প্যাথলজিতে বিশেষ রুটিন তৈরি হবে। জরুরি পরিস্থিতিতে একাধিক বিভাগের কাজের ধরন বদলে যায়। হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের কর্মীদের ডেঙ্গির চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই পরিস্থিতি বুঝে তাঁদের সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেটা যাতে যথাযথ হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে হাসপাতালের কর্তাদের। কোনও অভিযোগ পেলে জনস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নবান্নের শীর্ষমহল থেকে ডেঙ্গি নিয়ে প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ গিয়েছে। তাই ২০১৭-র ‘ভুল’ শুধরে নিতে চাইছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। প্রসঙ্গত, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে রক্ত পরীক্ষা নিয়ে গত বছর একাধিক অভিযোগ উঠেছিল।
স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষকর্তা জানান, ডেঙ্গি রোগী বছরভর হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু বছরভর পরিস্থিতি খারাপ থাকে না। অর্থাৎ, যে পরিকাঠামো রয়েছে তাতে অতিরিক্ত চাপ পড়লেই সমস্যা হয়। রোগী পরিষেবা ব্যাহত হয়। ডেঙ্গির মরসুমে হাসপাতালকে তাই বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘কয়েক বছর ধরে রাজ্যে ডেঙ্গি হচ্ছে। হাসপাতালেরও পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা রাখা উচিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ঠিক মতো দেখভাল না হওয়ায় সংক্রমণ ছড়ায়। সে দিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
চিকিৎসকদের একাংশ জানান, ডেঙ্গি ২ এবং ডেঙ্গি ৪-এর প্রকোপ এ রাজ্যে বেশি। এই দু’রকম ডেঙ্গি দ্রুত ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। তাই প্রয়োজনে বারবার রক্ত পরীক্ষা করে আক্রান্তের প্লেটলেটের হিসাব রাখা জরুরি হয়ে ওঠে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে রোগীর রক্ত পরীক্ষা নিয়ে গড়িমসি দেখা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সকালের রিপোর্ট হাতে মেলে সন্ধ্যায়। ‘ছুটির দিন’ হলে তো রিপোর্ট পরের দিন। যা সমস্যা বাড়ায়।