এখন খোলা থাকত রোজ আট ঘণ্টা। মে মাস থেকে তার দ্বিগুণ অর্থাৎ ১৬ ঘণ্টা খোলা থাকবে বাগডোগরা বিমানবন্দরের টার্মিনাল। নতুন ব্যবস্থায় ভোরবেলা কলকাতা থেকে রওনা হয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে বাগডোগরায়। সেখান থেকে সকাল সকাল পাহাড়ে উঠে যেতে পারবেন পর্যটকেরা।
এত দিন বেলা ১১টার আগে বাগডোগরায় কোনও বিমান নামতে পারত না। কারণ, যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দর খোলাই হত ১১টার পরে। সন্ধ্যা ৭টায় বন্ধ হয়ে যেত টার্মিনাল। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা রাকেশ সহায় জানান, মে মাসের শুরু থেকে ভোর ৬টায় খুলে যাবে বাগডোগরা। রাত ১০টা পর্যন্ত সেখানে বিমান ওঠানামা করবে। ‘‘সকালে কলকাতা থেকে বাগডোগরায় উড়ান চালাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া এবং স্পাইসজেট। মে মাসে তারা উড়ান শুরু করতে পারবে,’’ বলেন রাকেশ।
বাগডোগরা থেকে যাতে রাতে বিমান ওঠানামা করতে পারে, তার জন্য আগেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে। কিন্তু কলকাতা থেকে সন্ধ্যার পরে বাগডোগরায় উড়ান চালিয়ে লাভ হবে না বলে জানায় বিমান সংস্থাগুলিই। তাদের বক্তব্য, সন্ধ্যার বিমানে বাগডোগরায় পৌঁছলেও রাতে গাড়িতে পাহাড়ে ওঠা সম্ভব হয় না। তাই পর্যটকেরা বিমানের ভাড়া গুনে সন্ধ্যার পরে বাগডোগরায় গিয়ে সেখানে আবার হোটেলে থাকার জন্য খরচ করতে চান না। সে-ক্ষেত্রে কলকাতা থেকে রাতের ট্রেন ধরে ভোরে নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছে যাওয়াটা অনেক বেশি সুবিধাজনক। তবে কলকাতায় ভোরের উড়ান চালু হলে পর্যটকেরা যেতে উৎসাহী হবেন।
রাকেশ জানান, নিরাপত্তারক্ষীর অভাবে এত দিন বাগডোগরা বিমানবন্দর বেশি ক্ষণ খুলে রাখা যাচ্ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু দিন ধরে নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত সিআইএসএফ জওয়ান চেয়ে পাঠিয়েছিলাম। মঙ্গলবার সেই অতিরিক্ত বাহিনী আসতে শুরু করেছে। মোট ৭১ জন জওয়ানের আসার কথা। তাঁরা এসে গেলেই ওখানে সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিমান ওঠানামা করবে।’’
এখন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সব বিমান ভিড় করে বাগডোগরায়। যাত্রীরা বসার জায়গা খুঁজে পান না। বাগডোগরা থেকে এই মুহূর্তে প্রতিদিন দিল্লিতে ১০টি, কলকাতায় ন’টি, গুয়াহাটিতে চারটি, মুম্বইয়ে দু’টি, বেঙ্গালুরুতে একটি উড়ান যাতায়াত করে। পারো-ব্যাঙ্কক রুটে উড়ান চলে সপ্তাহে দু’দিন। সব থেকে বেশি উড়ান রয়েছে ইন্ডিগো ও স্পাইসজেটের। দু’টি সংস্থাই প্রতিদিন ছ’টি উড়ান চালাচ্ছে। রোজ গড়ে সাড়ে তিন হাজার যাত্রী বাগডোগরায় নামছেন। সমসংখ্যক যাত্রী উড়ে যাচ্ছেন বাগডোগরা থেকে। রাকেশের আশা, বিমানবন্দর খুলে রাখার সময়সীমা বাড়ার পরে কিছু উড়ানকে দুপুর থেকে সরিয়ে সকালের দিকে নিয়ে গেলে ওই সময়ের উপরে থেকে যাত্রীর চাপ কমে যাবে।