ফেসবুকে বিদ্ধ বন দফতর

বাঘ খুনের পরে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল সাইটের দেওয়াল ক্ষোভে ছয়লাপ। নিশানায় সেই বন দফতরই। বন্যপ্রাণপ্রেমীদের বক্তব্য, বাঘ ধরতে বন দফতর অনেক সময় পেয়েছিল। তবে সময়টাকে কাজে লাগাতে পারেনি। পরিকল্পনায় গলদও ছিল। রাজ্যের এক বনকর্তার অবশ্য দাবি, “আমরা চেষ্টার ত্রুটি রাখিনি। আসলে সুযোগ মেলেনি!”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৪
Share:

নির্ভয়ে: জঙ্গলে আর বাঘ নেই। তাই নিশ্চিন্তে চলছে গরু চরানো। শনিবার বাগঘোরায়। ছবি: কিংশুক আইচ

বাঘ খুনের পরে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল সাইটের দেওয়াল ক্ষোভে ছয়লাপ। নিশানায় সেই বন দফতরই। বন্যপ্রাণপ্রেমীদের বক্তব্য, বাঘ ধরতে বন দফতর অনেক সময় পেয়েছিল। তবে সময়টাকে কাজে লাগাতে পারেনি। পরিকল্পনায় গলদও ছিল। রাজ্যের এক বনকর্তার অবশ্য দাবি, “আমরা চেষ্টার ত্রুটি রাখিনি। আসলে সুযোগ মেলেনি!”

Advertisement

কী করলে ঠিক হত, কী হত না, সেই নিয়ে তরজা চলছে সোশ্যাল সাইটে। বিদ্ধ হচ্ছে বন দফতর। এক পশুপ্রেমীর তোপ, ‘আশঙ্কাই সত্যি হল। বন দফতরের আগে নির্মম গ্রামবাসীরাই বাঘের নাগাল আগে পেল! জঙ্গলের প্রাণী জঙ্গলে থাকবে। এটাও তার অপরাধ!’ আরেকজনের আফশোস, ‘সে এসেছিল কোন সুদূর হতে। একটু খাদ্যের আশায়। একটু নিশ্চিন্ত বাসস্থান। একটা নিরাপদ জঙ্গলের স্বপ্ন চোখে নিয়ে সে খুঁজে নিয়েছিল আমাদের বাংলাকে। হায়রে নিয়তি। এই বাংলাতেই প্রাণ দিতে হল তাকে। অপদার্থ বন দফতর তাকে ধরতে তো পারলই না। কেড়ে নিল তার ক’টা দিনের শান্তি। শুধু মনে রেখো এই হত্যালালী থেকে মুক্তি নেই কারও!’ অন্য এক পশুপ্রেমীর আক্রমণ, ‘লালগড়ের জঙ্গলে এতদিন ধরে একটা বাঘকে ধরতে পারল না। শেষমেশ গ্রামবাসীদের হাতে বাঘটাকে মরতে হল। বলি এটা বন দফতর? না অন্য কিছু!’ একজনের আবার কটাক্ষ, ‘কত আয়োজন, কত অর্থ ব্যয়ের পরে শেষে জঙ্গল থেকে মৃত বাঘ উদ্ধার করার কৃতিত্ব দেখাল বন দফতর!’

বাঘ খুনের পরে ফেসবুকের দেওয়ালে এমন কত মন্তব্যই ভেসে উঠছে। বন্যপ্রাণপ্রেমীদের কেউ লিখেছেন, ‘যারা বলেছিল, বাঘ-টাঘ কিচ্ছু নেই, সব গুজব, ওদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হোক!’ কেউ লিখেছেন, ‘ছিঃ ছিঃ। একটা প্রাণীকে বাঁচাতে পারলে না। তাকে মেরেও উল্লাস। এটা বন দফতরের চরম অপদার্থতাও।’ কারও মন্তব্য, ‘শেষ হয়ে গেল একটি অমূল্যপ্রাণ। মৃত প্রাণের উপর চলেছে নিজস্বী তোলার প্রতিযোগিতা। যারা মারল তারা হয়তো নিজেরাও জানে না কী হারাল।’ কারও বক্তব্য, ‘এই বন্যপ্রাণীর নির্মম হত্যায় বন দফতরের চরম গাফিলতির তীব্র নিন্দা করছি।’ আবার কারও মতে ‘বাঘটি কোনও সাধারণ মানুষকে মারেনি। বন্যপ্রাণ শিকারের হাত থেকে রক্ষা করেছে। এর শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে। তাই না!’ কারও দাবি, ‘বন্যপ্রাণী শিকার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করতে হবে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে।’

Advertisement

সব দেখে রাজ্যের এক বনকর্তা বলছেন, “বাঘটাকে উদ্ধার করে তার পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া গেল না। এটা আমাদের কাছেও খারাপ লাগছে। আসলে চেষ্টা করেও তো অনেক সময় অনেক কিছু হয় না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন