বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত মামলাগুলি গুটিয়ে আনতে চাইছে সিবিআই। নতুন করে ২০০-র বেশি ছোট সংস্থার বিরুদ্ধেও তদন্ত হবে। সূত্রের খবর, এ সব ক্ষেত্রেই তদন্ত দ্রুত শেষ করে, চূড়ান্ত চার্জশিট দিয়ে তাদের তরফে কাজ শেষ করতে চাইছে সিবিআই। ব্যতিক্রম শুধু সারদা এবং রোজভ্যালি মামলা। ওই দু’টি সংস্থা সংক্রান্ত তদন্ত এখনও চালিয়ে যেতে চায় সিবিআই।
ইতিমধ্যেই সারদা নিয়ে ৬টি এবং রোজভ্যালি নিয়ে ৩টি চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। কিন্তু, কোনওটাই চূড়ান্ত নয়। প্রতি বারই চার্জশিট জমা দেওয়ার পরে জানানো হয়েছে, ‘আরও তদন্তের প্রয়োজন’।
কেন? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের দাবি, ওই দুই সংস্থার টাকা এতটাই ছড়িয়ে ছিল যে তার বড় অংশের হদিস এখনও পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া, ওই দুই সংস্থার প্রেক্ষিতেই ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ উঠেছিল। তদন্তকারীদের দাবি, এখনও পর্যন্ত যাঁরা ওই দুটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁদের বাইরেও এখনও কোনও ‘প্রভাবশালী’র নাম উঠে আসতে পারে।
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, সারদা ও রোজভ্যালি মামলাকে আপাতত ‘আস্তিনে লুকনো অস্ত্র’ হিসাবে রেখে দিতে চায় এনডিএ সরকার। যাতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘রাজনৈতিক’ প্রয়োজনে সেই অস্ত্র ব্যবহার করা যায়।
সারদা মামলায় প্রথম দিকের তদন্ত এই রাজ্যের পুলিশ শুরু করেছিল। পরে অভিযোগ ওঠে, তদন্তের নামে আড়াল করা হয়েছিল কয়েকজন প্রভাবশালীকে। তদন্তকারী দলের কয়েক জন অফিসারকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে সিবিআই। তবে দলের কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অবকাশ এখনও রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সারদা মামলায় সংস্থার দুই কর্ণধার সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায় ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার এজেন্ট অরিন্দম দাস বর্তমানে জেলে রয়েছেন। রোজভ্যালিতে জেলে রয়েছেন সংস্থার কর্তা গৌতম কুণ্ডু।
২০১৪ সালের মে মাসে সিবিআইকে প্রায় ২৭৫টি বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। দেখা গিয়েছে, রোজভ্যালি ও সারদার মতো এত বিশাল অঙ্কের টাকার নয়ছয় আর কোনও সংস্থায় নেই। অন্য সংস্থার ক্ষেত্রে এত প্রভাবশালীর নামও জ
ড়িত নয়। বাকি সংস্থাগুলির মধ্যে যেগুলি বাজার থেকে ২০০ কোটি বা তার চেয়ে বেশি টাকা তুলেছিল, সেই আইকোর, র্যামেল, মঙ্গলদীপের মতো সংস্থার ক্ষেত্রে তদন্ত শেষ। কিছু ক্ষেত্রে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে। এ বার সিবিআই নতুন করে প্রায় ২০০টি ছোট সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে চলেছে, যাদের টাকা নয়ছয়ের পরিমাণ ১০ কোটি টাকার কাছাকাছি। সূত্রের খবর, খুব দ্রুত তদন্ত শেষ করে এই সব মামলার ক্ষেত্রেও চূড়ান্ত চার্জশিট দেওয়া হবে।
সে ক্ষেত্রে শুধু পড়ে থাকবে সারদা ও রোজভ্যালির ফাইল।