কোপাইয়ের কাছে হঠাৎ ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া। থমকে গেল শিয়ালদহমুখী দিল্লি এক্সপ্রেস। ট্রেন বন্ধ বর্ধমান শাখায়। ছবি: তুহিনশুভ্র দে।
রেলের ‘লেভেল ক্রসিং’ পেরোতে গেলে ঘুরতে হবে বাড়তি দু’কিলোমিটার পথ। মোটরবাইকে মাকে নিয়ে আরও সহজে কোপাইয়ের একটি ব্যাঙ্কে পৌঁছতে তাই বিপজ্জনক ভাবে রেল লাইন টপকাতে গিয়েছিলেন বোলপুরের কাছের নওয়াডাঙালের এক যুবক। তাতেই বিপত্তি ঘটে বলে দাবি রেল পুলিশের।
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, কোপাই স্টেশন থেকে পাঁচশ মিটার দূরে কোপাই পূর্ব কেবিন মোড় এলাকায় দু’টি লাইনের মধ্যে আটকে যায় মোটরবাইকের চাকা। বৃহস্পতিবার সকালে তখনই সেখানে চলে আসে শিয়ালদহগামী ডাউন দিল্লি এক্সপ্রেস। প্রাণ বাঁচাতে মোটরবাইক লাইনে ফেলে সরে যান মা, ছেলে। ইঞ্জিনের চাকায় জড়ায় মোটরবাইক। গতি বেশি থাকায় সে ভাবেই প্রায় এক কিলোমিটার এগিয়ে যায় ট্রেন। ঘষা খেয়ে মোটরবাইকের ট্যাঙ্ক থেকে পেট্রল বেরিয়ে আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়ায় ইঞ্জিনেও। গলগলিয়ে বেরোতে থাকে ধোঁয়া।
ট্রেন থামার পরে আগুন নেভাতে দিল্লি এক্সপ্রেসের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, কোপাই স্টেশন ও পাশের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। খবর দেওয়া হয় দমকলে। দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার পরে আপ লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। রেল সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট থেকে বেলা ১২টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে প্রান্তিক স্টেশন থেকে নতুন ইঞ্জিন নিয়ে এসে ওই ট্রেনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। গন্তব্যে রওনা দেয় দিল্লি এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনায় হতাহতের খবর নেই। মোটরবাইকটি যাঁর, সেই যুবকের খোঁজ চলছে বলে জানায় রেল পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সপ্তাহ দু’য়েক আগে কোপাই পূর্ব কেবিন মোড়েই লাইনে আটকেছিল একটি ‘ভ্যানো’র চাকা। তখনও ট্রেন চলাচলে সমস্যা হয়েছিল। এলাকাবাসীর দাবি, ওই জায়গায় একটি ‘লেভেল ক্রসিং’ তৈরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে রেলের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছে। তাতে কাজ হচ্ছে না। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, সব জায়গায় ‘লেভেল ক্রসিং’ গড়া সম্ভব নয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘যেখান-সেখান দিয়ে লাইন পেরনো কতটা ঝুঁকির তা জানাতে নিয়মিত প্রচার চালানো হয়। লোকে তা না মানাতেই ঘটে বিভ্রাট।’’