বহু শীর্ষ পদ শূন্য, ক্ষোভ যাদবপুরে

কেন্দ্র সম্প্রতি দেশের যে-সব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণ স্বশাসন দিয়েছে, সেই তালিকায় আছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র‌্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক’-এ যাদবপুরের র‌্যাঙ্ক কিছুটা নেমে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৪
Share:

কেন্দ্র সম্প্রতি দেশের যে-সব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণ স্বশাসন দিয়েছে, সেই তালিকায় আছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র‌্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক’-এ যাদবপুরের র‌্যাঙ্ক কিছুটা নেমে গিয়েছে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীর অভাবের বিষয়টি এই র‌্যাঙ্কিং নির্ধারণে বিচার্য না-হলেও তা নিয়ে সরব হয়েছেন যাদবপুরের শিক্ষক-পড়ুয়াদের একাংশ। রেজিস্ট্রার, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, মুখ্য গ্রন্থাগারিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা রেখে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সব পদেই নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

যাদবপুর সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সব কাজ দেখভালের দায়িত্ব রেজিস্ট্রারের উপরে ন্যস্ত। ২০১৭ সালের অগস্টে রেজিস্ট্রার থেকে সহ-উপাচার্য হয়েছেন প্রদীপ ঘোষ। তার পর থেকে রেজিস্ট্রারের পদ খালি। নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষের আগেই নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিত। কিন্তু সেটা করা হয়নি। অস্থায়ী ভাবে ওই পদ সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে। পরে সেই দায়িত্ব পান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। বর্তমানে তিনিই রেজিস্ট্রার। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

মুখ্য গ্রন্থাগারিকের পদ শূন্য পড়ে আছে ২০১০ সালের নভেম্বর থেকে। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে খালি গ্রন্থাগারিকের পদ। এক শিক্ষক জানান, শিক্ষক-শিক্ষিক আর ছাত্রছাত্রী, দু’পক্ষের কাছেই গ্রন্থাগার অপরিহার্য। কারণ বই, জার্নাল সংরক্ষিত রাখেন গ্রন্থাগারের কর্মীরা। সেই বিভাগের দুই শীর্ষ পদ দীর্ঘদিন খালি থাকায় পড়ুয়াদের পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অর্থ বিভাগেও চার জন কর্মীর মধ্যে দু’জন নেই। ডেপুটি ফিনান্স অফিসার লিয়েন-ছুটি নিয়েছেন। এক জন চিফ ইঞ্জিনিয়ার থাকার কথা। কিন্তু পদটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। ফলে নতুন ভবনের সংস্কার এবং প্রতিদিনের সাধারণ কাজেও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

শুধু যে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদই খালি, তা নয়। বিজ্ঞানের ডিন সুব্রতনাথ কোনার দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। কলা বিভাগের ডিন না-আসায় সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন অন্য বিভাগের ডিন। কয়েক দিন তিনিও অনুপস্থিত।

যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সহ-সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয় এমন পরিস্থিতি বাঞ্ছনীয় নয়। রোজকার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে নীতি নির্ধারণে।’’ দ্রুত পদ পূরণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন আবুটা-ও।

কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের চেয়ারপার্সন সোমাশ্রী চৌধুরী বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকার পাশাপাশি প্রশাসনিক কর্মীর অভাবের জেরে আমাদের পড়াশোনায় অসুবিধা হচ্ছে। যাঁরা বলেন, এখানে রাজনীতি হয় কিন্তু পড়াশোনা হয় না, তাঁদের বলছি, আগে পরিকাঠামো ঠিক করে পরিষেবা দিন।’’ উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘কিছু শূন্য পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কোথাও ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যোগ্যতামানে ঘাটতি থাকায় নিয়োগ হয়নি। কোনও কোনও পদে নিয়মের জটিলতায় নিয়োগ করা যাচ্ছে না। তবে দ্রুতই সেটা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন