নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে তৈরি হচ্ছে ছাত্রদল

দফতরের এক কর্তা জানান, জেলায় মোট ১০৯৩টি স্কুল রয়েছে। প্রতিটি স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে তিন জন ছাত্র ও তিন জন ছাত্রীকে নিয়ে মোট ছ’জনের কয়েকটি দল তৈরি করা হবে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

নাবালিকাদের বিয়ে রুখতে এ বার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর তৈরি করছে ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ দল। পড়ুয়ারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতন করবে বলে দফতর সূত্রের খবর। বিয়ে না করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার বিষয়েও প্রচার করবে এই পড়ুয়ার দল। গোটা প্রক্রিয়ার ওপরে নজরদারি চালাবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাদলকুমার পাত্র জানান, কয়েক দিন আগে ক্যানিং মহকুমা অন্তর্গত সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে এক বৈঠক হয়েছে। সেখানেই বাল্যবিবাহ রুখতে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি বিশেষ দল গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে জেলার অন্য সমস্ত স্কুলের সঙ্গে বৈঠক করেই বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলা হবে বলে জানান তিনি।

দফতরের এক কর্তা জানান, জেলায় মোট ১০৯৩টি স্কুল রয়েছে। প্রতিটি স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে তিন জন ছাত্র ও তিন জন ছাত্রীকে নিয়ে মোট ছ’জনের কয়েকটি দল তৈরি করা হবে। এরপর স্কুলের আড়াই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে থাকা পরিবারগুলিকে ওই দলের মধ্যে ভাগ করে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি দলের দায়িত্বে থাকবে পাঁচটি পরিবার। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দু’দিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে হবে ওই পড়ুয়াদের। ওই পরিবারে কোনও মেয়ে থাকলে তার ফোন নম্বর নিয়ে তার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। বোঝাতে হবে নাবালিকা বিবাহের কুফল। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করবে স্কুল। একই ভাবে স্কুল-ছুট কমাতে স্কুলকে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে।

Advertisement

বাল্যবিবাহ রুখতে পদক্ষেপ

• ছ’জন পড়ুয়াকে নিয়ে দল গঠন

• প্রতিটি দলের দায়িত্বে অন্তত পাঁচটি পরিবার

• নাবালিকাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক, ফোনে যোগাযোগ

• সরকারের প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে প্রচার

• কম বয়সে বিয়ে করার ফলে শারীরিক অসুবিধা নিয়ে প্রচার

সচেতনতার পাশাপাশি সরকারের যে সমস্ত সুবিধা রয়েছে সেগুলিও তুলে ধরতে হবে। যারা এই সুবিধা পেতে পারে, তাদের নামের তালিকা করে পাঠাতে হবে জেলা প্রশাসনের কাছেও। স্কুলে সুন্দর পরিবেশ, মিড ডে মিল ও নানা প্রকল্পের প্রচার করবে ওই পড়ুয়ারা। জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, ২০১৭-১৮ অর্থ বর্ষে এখনও পর্যন্ত ২৬ হাজার কন্যাশ্রী দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে স্কুল পড়ুয়ারা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিলে প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন