২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটের আগে গুলিতে খুন হয়েছিলেন পাড়ুইয়ের সাগরচন্দ্র ঘোষ। আর এক পঞ্চায়েত ভোটের আগে, ওই মামলায় ৮ অভিযুক্তের মধ্যে দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করল বীরভূম জেলা আদালত। বৃহস্পতিবার ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন বীরভূমের জেলা জজ পার্থসারথি সেন।
গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রকাশ্য সভায় নির্দল প্রার্থীদের বাড়ি ভেঙে আগুন লাগানোর নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
তার পরেই পাড়ুইয়ের বাঁধনবগ্রামে, কসবা পঞ্চায়েতের নির্দল (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল) প্রার্থী হৃদয় ঘোষের বাড়িতে হামলা হয়। গুলিবিদ্ধ হন তাঁর বাবা, অবসরপ্রাপ্ত স্কুলকর্মী সাগর ঘোষ। বীরভূমের এসপি-র কাছে অনুব্রত-সহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন নিহতের পরিজনেরা। উস্কানিমূলক মন্তব্যে পুলিশকে অনুব্রতের বিরুদ্ধে মামলা শুরুর নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৪-র জুলাইয়ে জেলা আদালতে জমা পড়া চার্জশিটে অনুব্রত-সহ একাধিক অভিযুক্তের নাম ছিল না। সে বছর সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে হাজিরা দিয়ে রাজ্য পুলিশের তৎকালীন ডিজি দাবি করেন, ওই ঘটনায় অনুব্রতের কোনও প্রভাব ছিল না।
এ দিন সরকারি কৌঁসুলি রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বেআইনি প্রবেশ, খুন ও অস্ত্র আইনের ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বাঁধনবগ্রামেরই সজলকান্তি ওরফে সুব্রত রায় ও ভগীরথ ঘোষ। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছয় অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পান। আজ, শুক্রবার সাজা শোনাবেন বিচারক। তিনি জানান, ওই দু’জনের অপরাধ প্রমাণিত। খুনের জন্য মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন, বেআইনি প্রবেশের জন্য ১ বছর কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা এবং অস্ত্র আইনে ৩-৭ বছর জেল হতে পারে। সজল ও ভগীরথের বক্তব্যও জানতে চান জেলা জজ। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা নির্দোষ। আদালত যখন বলছে, তখন সাজা যেন সর্বনিম্ন হয়।’’
হৃদয়বাবুর মন্তব্য, ‘‘বাবাকে যারা মেরেছে, তারা ওই সময় তৃণমূলের কাছে আসার চেষ্টা করছিল।’’ তাঁর স্ত্রী শিবানী বলেন, ‘‘এই বিচারে খুশি।’’