সমাবর্তনে বাজপেয়ীর কাছেও হাজির স্বপন!

অনেক বছর আগের একটি স্মৃতি এখনও টাটকা শঙ্কর-বিনয়দের। তাঁরা জানান, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালুপ্রসাদ হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন শাখায় ট্রেনযাত্রা করেছিলেন। মানকুণ্ডু স্টেশন দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় সকলের চোখ ছানাবড়া। রেলমন্ত্রীর কামরাতেই স্বপন! এক বার ইডেনের ক্লাব হাউসেও ঢুকে পড়েছিলেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছবি তুলবেন বলে।

Advertisement

প্রকাশ পাল ও তাপস ঘোষ

মানকুণ্ডু শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০৪:৩০
Share:

বিশ্বভারতীর সমাবর্তন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বপন। —ফাইল চিত্র।

এ বারই প্রথম নয়!

Advertisement

শুক্রবার বিশ্বভারতীর সমাবর্তন-মঞ্চে উঠে নরেন্দ্র মোদীর কাছে পৌঁছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি। অনেক বছর আগে এই সমাবর্তন-মঞ্চেই তাঁকে দেখা গিয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর কাছেও!

তিনি— মান‌কুণ্ডুর নবগ্রাম দাসপাড়ার স্বপন মাঝি। তাঁর নতুন ‘কীর্তি’র কথা শুনে আত্মীয়-পড়শিরা বলছেন, লোকটা খারাপ নন। শুধু ‘বড়’ লোকদের কাছে পৌঁছনো তাঁর নেশা। তাঁদের একটাই আর্তি— পুলিশি ঝামেলায় যেন না-পড়তে হয় স্বপনকে। তাঁরা জানান, মোদী-বাজপেয়ী ছাড়াও লালুপ্রসাদ যাদব, কপিল দেব, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছেও চলে গিয়েছিলেন বছর সাতচ‌ল্লিশের মানুষটি।

Advertisement

স্বপন অকৃতদার। চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট। কাঠের মিস্ত্রি হিসেবে এক সময়ে নামডাক ছি‌ল। এখন নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। বাড়ি ফেরেন কালেভদ্রে। দাদা-বৌদিদের কাছেই থাকেন। শুক্রবার রাত থেকে তাঁরা স্বপনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেননি। সেজদা বিনয় বলেন, ‘‘কাল টিভিতে শুনি এক জন মঞ্চে উঠে পড়েছে। তখনও ছবি দেখায়নি। নামও বলেনি। শুনেই ছেলেমেয়েকে বলি, তোদের কাকা নয়তো! পরে দেখি ঠিক তাই।’’ বড়দা শঙ্কর বলেন, ‘‘ওর এটাই ব্যামো। বড় মানুষদের সঙ্গে ছবি তোলা।’’

অনেক বছর আগের একটি স্মৃতি এখনও টাটকা শঙ্কর-বিনয়দের। তাঁরা জানান, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালুপ্রসাদ হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন শাখায় ট্রেনযাত্রা করেছিলেন। মানকুণ্ডু স্টেশন দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় সকলের চোখ ছানাবড়া। রেলমন্ত্রীর কামরাতেই স্বপন! এক বার ইডেনের ক্লাব হাউসেও ঢুকে পড়েছিলেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছবি তুলবেন বলে।

পৈতৃক সম্পত্তির কাঠা ছয়েক জমি, বিঘে চারেক বাগান রয়েছে স্বপনের নামে। কিন্তু সে দিকে তাঁর মন নেই। বড় বৌদি অন্নপূর্ণা বলেন, ‘‘কত বলেছি, সংসার করো। আমাদের কথা শুনলে তো! ওকে ছেলের মতো দেখি। পুলিশ যেন তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেয়।’’

এলাকার লোক স্বপনকে এক ডাকে চেনেন। সুব্রত ভক্তা নামে এক যুবক বলেন, ‘‘ও একটু ভবঘুরে প্রকৃতির। দেখা হলেই রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের বাণী শোনায়।’’ অরূপ মণ্ডল নামে আর এক যুবকের মতে, ‘‘স্রেফ নেশাতেই মঞ্চে উঠে পড়েছিলেন স্বপন। অসৎ উদ্দেশ্যে নয়। ও রাজনীতিরও ধার ধারে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন