রক্ত বিভাজনের প্রযুক্তি আরও ২১ ব্লাড ব্যাঙ্কে

জুন থেকে অক্টোবর ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে অণুচক্রিকার চাহিদা। কিন্তু সেই চাহিদা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত সরকারি পরিকাঠামো নেই বলে অভিযোগ উঠছে বারবার।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ডেঙ্গির মরসুমে প্লেটলেট বা অণুচক্রিকার আকালে জেলা থেকে শহর, সর্বত্রই নাজেহাল হন রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়পরিজন। জুন থেকে অক্টোবর ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে অণুচক্রিকার চাহিদা। কিন্তু সেই চাহিদা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত সরকারি পরিকাঠামো নেই বলে অভিযোগ উঠছে বারবার। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বাস্থ্য দফতর নতুন পরিকাঠামো তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

রক্তদাতার কাছ থেকে রক্ত নেওয়ার পরে লোহিত কণিকা, শ্বেত কণিকা এবং অণুচক্রিকা— এই তিনটি উপাদান ভাগ করার পরিকাঠামো রয়েছে রাজ্যের মাত্র ১৭টি সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে। কলকাতায় সাতটি এবং জেলায় দশটি। অণুচক্রিকার চাহিদা পূরণে এটা পর্যাপ্ত নয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্তের উপাদান ভাগ করার পরিকাঠামো তৈরি হবে আরও ২১টি ব্লাড ব্যাঙ্কে।
এই খাতে প্রায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

চিকিৎসক শিবির জানাচ্ছে, ডেঙ্গির মরসুমে অণুচক্রিকার চাহিদা বাড়ে। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের আলাদা চাহিদা থাকে সারা বছরই। সব রোগীর রক্তে সব ধরনের উপাদানের প্রয়োজন হয় না। যেমন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর দরকার লোহিত কণিকা। যেমন ডেঙ্গি আক্রান্তের অণুচক্রিকা ছাড়া চলবেই না। উপাদান ভাগ না-করা ‘হোল ব্লাড’ বা সব উপাদানযুক্ত রক্ত অনেক সময়েই নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রাথমিকের শিক্ষকেরা পরীক্ষাকেন্দ্রে, ছুটি স্কুল

রোগীকে ‘হোল ব্লাড’ দিলে রক্তের অপচয় হয় জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কারণ, রক্তের উপাদান ভাগ করে ব্যবহার করলে এক ইউনিট রক্ত অন্তত তিন জন রোগীর চিকিৎসার কাজে লাগতে পারে। ‘হোল ব্লাড’ হলে তা সম্ভব নয়। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে উপাদান ভাগ করা যায় না। তখন রোগীরা ‘হোল ব্লাড’ নিতে বাধ্য হন। অণুচক্রিকার প্রয়োজন নেই যাঁদের, তাঁদের শরীরে সেই উপাদানের অপচয় হয়। আবার অনেক সময়ে অণুচক্রিকার অভাবে অন্যদের চিকিৎসা আটকে থাকে।

রক্ত বিভাজনের ব্লাড ব্যাঙ্ক

• কলকাতা: ৭

• জেলা: ১০

• নতুন হবে: ২১

• বরাদ্দ: ২০ কোটি

সূত্র: স্বাস্থ্য ভবন

শুধু পরিকাঠামোর যান্ত্রিক উন্নয়ন করেই ক্ষান্ত হতে চায় না সরকার। এই সমস্যার সমাধান যাতে স্থায়ী হতে পারে, সেই জন্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদেরও দায়বদ্ধ করতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর। ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা এক শীর্ষ কর্তা জানান, কোনও রোগী অণুচক্রিকা না-পেলে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করবেন। সেই অভিযোগের উত্তর দেওয়ার দায় বর্তাবে জনস্বাস্থ্য আধিকারিকের উপরেই। রাজ্যের সর্বত্র পর্যাপ্ত পরিণামে অণুচক্রিকা রয়েছে কি না, সে-দিকে নজর রাখার দায়িত্ব জনস্বাস্থ্য আধিকারিকের। তিনি হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। ‘‘কোনও জেলায় অণুচক্রিকার সমস্যা হলে জেলার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল অফিসার যোগাযোগ করবেন স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে,’’ বলেন ওই কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন