পুলিশ ও আমজনতার মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে প্রবীণ নাগরিকদের যত্নআত্তি, ফুটবল প্রতিযোগিতা, মহিলাদের আত্মরক্ষার পাঠ দেওয়ার মতো প্রকল্প আগেই শুরু করেছিল লালবাজার। রাজ্য পুলিশও এ বার সেই পথে।
নবান্ন সূত্রের খবর, সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে রাজ্য পুলিশেও ‘কমিউনিটি পুলিশ’ শাখা খোলা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের ধাঁচে তারাও একই রকমের প্রকল্প হাতে নেবে। কলকাতা পুলিশে এমন প্রকল্পের দায়িত্ব পালন করেছেন, এমন এক আইপিএস অফিসারকেই রাজ্য পুলিশের এই শাখাটির দায়িত্ব দেওয়া হবে।
কলকাতা পুলিশে প্রথম ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ চালু হয়েছিল বাম আমলের শেষ দিকে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য চালু হয়েছিল ‘নবদিশা’ নামে একটি প্রকল্প। আয়োজন করা হয় এলাকাভিত্তিক ফুটবল প্রতিযোগিতা। নিঃসঙ্গ বৃদ্ধবৃদ্ধাদের জন্য চালু হয় ‘প্রণাম’ প্রকল্প। থানায় ফোন করলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ‘কিরণ’ প্রকল্প চালু হয় কম্পিউটারের পাঠ দেওয়ার জন্য।
নবান্নের দাবি, রাজ্য পুলিশের আওতায় থাকা এলাকায় কোনও প্রকল্প না থাকলেও নানা ভাবে সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই চলে পুলিশ। এ বার তাকে সংগঠিত রূপ দেওয়া হচ্ছে। ‘‘নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও প্রকল্প থাকলে সম্পর্ক অনেক বেশি গভীর হবে,’’ মন্তব্য রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তার। তাঁর মতে, এতে দ্বিমুখী লাভ মিলবে। নাগরিকদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়লে সমাজের অনেক তথ্য পাবে পুলিশ। তাতে প্রশাসনের কাজকর্মে সুবিধে হবে। উল্টো দিকে সমস্যায় পড়লে অসহায় নাগরিকরাও সহজে পাশে পাবেন পুলিশকে।
তবে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণ ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। তাই ‘কমিউনিটি পুলিশ’ প্রকল্প নিয়ে রাজ্য পুলিশের কর্মীদের প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন ওই পুলিশকর্তা।
নবান্নের খবর, প্রাথমিক ভাবে জোর দেওয়া হবে রক্তদান, দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা, মহিলাদের আত্মরক্ষার পাঠ দেওয়ার মতো বিষয়ে। প্রকল্পটি কবে চালু হবে তার দিনক্ষণ অবশ্য এখনও নির্দিষ্ট হয়নি। পুলিশের এক শীর্ষকর্তা এ প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট পেরোলে এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি হতে পারে।’’