প্রতীকী ছবি।
শুধু নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বাহিনী আছে একাধিক। নিছক মেরামতির কাজের জন্যও আছে বিভিন্ন সংস্থা।
এ বার একই সঙ্গে সুরক্ষা দিতে এবং সারাইয়ের কাজ করতে দক্ষ একটি বিশেষ বাহিনী গড়ল রাজ্য সরকার। নাম দেওয়া হয়েছে স্পেশ্যাল ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন বা এসআইআরবি। কেন্দ্রীয় সংস্থা বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের ধাঁচে গড়া ওই বিশেষ বাহিনী নিরাপত্তা রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়বে, সারাবে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, সেতুও।
আপাতত এই বিশেষ বাহিনীর জন্য ৫৬০ জন কনস্টেবল নিয়োগ করেছে রাজ্য। পুলিশি সূত্রের খবর, নতুন বাহিনী নানা ধরনের কাজ করবে বলেই তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত হচ্ছে। বর্ধমানের বড়জোড়ায় নবনিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে রাজ্যের অন্য এক বিশেষ বাহিনী ‘কাউন্টার ইনসারজেন্সি ফোর্স’ বা সিআইএফ, যারা মাওবাদী এবং জঙ্গি দমনে দক্ষ। প্রথম দফার সেই প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে চলতি সপ্তাহেই। গত মাসেই প্রথম দফায় ওই ৫৬০ জন কনস্টেবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হয়। চলতি সপ্তাহে তাঁদের বড়জোড়ায় সিআইএফের প্রশিক্ষণে যোগ দিতে বলা হয়েছে। তার পরে তাঁদের রাস্তা ও সেতু নির্মাণ ও সারাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এসআইআরবি-র সদর দফতর হবে বীরভূমের রাজনগরে। মোট ১১০০ জনকে নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী গড়ে তোলার কথা। ইঞ্জিনিয়ারিং ও নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে দু’টি বিভাগ থাকছে। বাহিনীর সকলকেই ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শীর্ষে থাকবেন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক জন কম্যান্ডান্ট। তার নীচে থাকবেন তিন জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট। তাঁরা যথাক্রমে সদর দফতর, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বে থাকবেন। প্রথমে বাহিনীর জন্য ৫৬০ জন কনস্টেবল নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে।ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রায় ৩০০ কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানাচ্ছে রাজ্য পুলিশ। আধা-সামরিক বাহিনী বা সেনাবাহিনীর ধাঁচে এসআরআইবি-র পোশাক হবে জংলা রঙের।
আরও পড়ুন: বৈঠকে ডাকের অপেক্ষা পাহাড়ে
রাজ্যে ওই বিশেষ বাহিনী তৈরির প্রয়োজন হচ্ছে কেন?
রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় নাশকতা এবং দার্জিলিং-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সড়ক বা সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামতির জন্য মূলত ডাক পড়ে পূর্ত দফতরের। কিন্তু মাঝেমধ্যেই বিঘ্ন ঘটায় তাদের সেই কাজ করতে বেগ পেতে হয়। যথাসময়ে কাজ শেষ করার জন্য পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করতে হয়। এতে একই কাজের জন্য সরকারের দু’বার অর্থ ব্যয় হচ্ছে। নতুন বিশেষ বাহিনী নিরাপত্তা রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ও সেতু সারাইয়ের কাজও করবে। টাকা বাঁচবে সরকারের।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, “কেন্দ্রীয় সংস্থা বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন যে-ভাবে কাজ করে, এসআইআরবি-ও সেই ভাবেই কাজ করবে। ওই বাহিনীর সব সদস্যকেই সব রকমের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নিরাপত্তা রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু বা রাস্তাও মেরামত করবে তারা। এক বছরের মধ্যেই ওই বাহিনীকে রাস্তায় নামানো যাবে।”